এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ২২ জুলাই, ২০২৩, ০৭:০৭ পিএম
বাংলাদেশে ডিজিটাল ’বক্স অফিস’ না থাকলে কিভাবে সিনেমার হিসাব কষা হচ্ছে ?
সঙ্গীকে নিয়ে সিনেমা দেখতে জান্নাতুল শোভা, এসেই পড়েছেন কালোবাজারীর খপ্পরে। তার মতে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে টিকেট। আগে যে টিকেট বিক্রি করা হতো ১২০ টাকা করে তা এখন বিক্রি করা হচ্ছে ৩৫০ টাকা। যা কিনা দ্বীগুনেরও বেশি। এবার ঈদে মুক্তি পাওয়া বেশ কয়েকটি সিনেমা দর্শকদের মনে আগ্রহের জন্ম দিয়েছে। তাই মুক্তির ৩ সপ্তাহ পরেও পরিবার পরিজন নিয়ে হলে আসার এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে। বিবিসি বাংলা
টিকেটের চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে হল প্রাঙ্গণে আনাগোনা বেড়েছে কালোবাজারীদের, যদিও এব্যাপারে খুব একটা মাথা ব্যথা দেখা যায়নি হল কর্তৃপক্ষের। দর্শক ও হল মালিকদের কথায় ধারণা পাওয়া যাচ্ছে যে এবারের সিনেমাগুলো বেশ ভাল ব্যবসা করছে। এ তালিকায় সব থেকে উপরের দিকে রয়েছে নায়ক সাকিব খান অভিনিত প্রিয়তমা সিনেমা। প্রথম ৩ সপ্তাহে সিনেমাটি কেমন ব্যবসা করছে?
আরশাদ আদনানের (প্রযোজক, প্রিয়তমা) মতে এখন পযর্ন্ত ১৮.৮৫ কোটি টাকার টিকিট বিক্রয় হয়েছে আর খরচ হয়েছে ২ কোটি ২৩ লাখ টাকা। হলিউড, বলিউড সহ বিশ্বের বড় বড় ফিল্ম ইন্ড্রাস্টিতে সিনেমার আয়ের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হল বক্স অফিস। আধুনিক বক্স অফিস ব্যবস্থায় ইটিকেটিংএর মাধ্যমে টিকেট বিক্রি এবং সার্ভারের মাধমে সিনেমা প্রদর্শন করা হয়, এতে করে সিনেমার পাইরেসির ঝুঁকি যেমন কম থকে, তেমনি টিকেট বিক্রির সঠিক তথ্যও জানা যায়। বাংলাদেশে এখনও এ ব্যবস্থা পুরপোরি গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি।
তাহলে প্রযোজকরা সিনেমার আয়ের হিসাব কিভাবে পাচ্ছেন। ‘আরশাদ আদনান’ এ ব্যাপারে আরও বলেন যে টিকেট কাউন্ট কত হচ্ছে,কতো টাকার টিকেট সেল, কতো জন মানুষ দেখেছে এটা দেখার জন্য তিনি আরও ৪০ জন লোক নিয়োগ দিয়েছেন। চলচ্চিত্র শিল্পের ক্ষেত্রে চলচ্চিত্র নির্মাণ যতটা গুরুত্বপূর্ণ একই সাথে এর বিপণন ও প্রদর্শনী ও সমান গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ নির্মাণ ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে গেলেও এর বিপণন ও প্রদর্শনী ব্যবস্থায় এখন ও অনেক ত্রুটি রয়ে গেছে, এ ত্রুটি যুক্ত বিপণন ও প্রদর্শনীর কারণে প্রযোজকরা নানাভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে।
অমিতাভ রেজা চৌধুরীর (চলচ্চিত্র পরিচালক) বক্তব্য মতে একটা সিঙ্গেল স্ক্রিনে আপনার ছবির সাথে সাথে ৩ জন লোক পাঠাতে হয়, তার পয়সা আপনাকে দিতে হয় এবং তাদের কাছে যখন আপনি জানতে চাইবেন তারা আপনাকে বলবে যে কত টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে, এর বাইরে আপনি কিছু বলতে পারেন না। যদি ১০০ টাকার একটা টিকিট বিক্রি হয় তারা ৫০% টাকা নিয়ে যায় তারপরে যে ৫০% টাকা থাকে তা তারা আমাদের প্রভাইড করে। তাই আমাদের এই রেসিওটাকে বাড়াতে হবে। সেন্ট্রাল সার্ভারের মাধ্যমে ছবি ডিসট্রিবিউসন করা এডিটিং এর ব্যবস্থা করা। তখন আর এ প্রতিনিধি পাঠিয়ে দেখা বা ভিডিও কলে দেখা, এই সমস্যাগুলো আর থাকবে না। বাংলাদেশের সিনেমা ইন্ড্রাস্ট্রি বেশ পুরনো। তাহলে এখনো কেনো দেশে বক্স আফিস গড়ে উঠল না?
ড. জাকির হোসেন রাজুর (চলচ্চিত্র গবেষক) মতে এ চলচ্চিত্র নির্মাণের যে পুরো প্রক্রিয়া, এবং এইখানে যে লেনদেন, এ সবগুলোই এক ধরনের গ্রে জোনের মধ্যে আটকে আছে। কারা ওখানে বিনিয়োগকারী এটিও অনেক সময় ঠিকভাবে প্রকাশিত হয় না, এবং যারা যুক্ত তারাও চান না এটা ব্যাখ্যা করতে । বক্স অফিস কার্যকরের ব্যাপারে প্রযোজক ও পরিবেশকরা অনেক আগে থেকে উৎসাহ দেখিয়ে আসছেন। সম্প্রতি হল মালিকরাও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কিন্তু উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারির অভাবে তা কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা
এনবিএস/ওডে/সি