এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ২৪ জুলাই, ২০২৩, ০৫:০৭ পিএম
কিভাবে পারমাণবিক বোমার জনক হলেন ওপেনহাইমার?
হলিউডের নতুন সিনেমা ‘ওপেনহাইমার’ নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মোড় ঘুড়িয়ে দেয়া পারমাণবিক বোমার জনক হিসেবে পরিচিত পদার্থ বিজ্ঞানের রবার্ট ওপেনহাইমারের জিবনী নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সিনেমাটি। সে কারণেই এ বিজ্ঞানীকে নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন করে আগ্রহ।
জার্মানি থেকে অভিবাসী হয়ে আমেরিকায় আসা এক ইহুদি পরিবারে ১৯০৪ সালে জন্ম নেয় ওপেনহাইমার। বিলাসিতার মধ্যে জন্ম নেয়া ওপেনহাইমার অত্যন্ত লাজুক হলেও ছিলেন খুবই বুদ্ধিমান। খেলাধুলায় কোন আগ্রহ না থাকলেও তিনি মাত্র ৯ বছর বয়সে গ্রিক ও লাতিন দর্শন পড়ে ছিলেন আর আগ্রহী ছিলেন খনিজ পদার্থে। ওপেনহাইমার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নে পরেন এরপর স্নাতকোত্তর করেন ইংলেন্ডের কেমব্রিজে।
তবে স্পর্শ কাতর ও উদ্ধত ব্যক্তিত্ব তার জন্য নানা সমস্যার কারণ হয়। ল্যাবরেটরিতে কাজের আগ্রহ না থাকলে ও শিক্ষকের জোরাজুরিতে বিরক্ত হয়ে একদিন তিনি একটি আপেলের ভেতর বিষাক্ত রাসয়নিক পদার্থ ভরে তার টিউটরের ডেক্সে রেখে দেয়। সৌভাগ্যবশত টিউটর আপেলটি খাননি কিন্তু ওপেনহাইমারের কেম্ব্রিজে পড়াই এ জন্য ঝুঁকির মুখে পড়ে শেষে মনোবিজ্ঞানীর কাছে যাবার শর্তে কেম্ব্রিজে পড়ার অনুমতি পায় সে। পরের বছর এক বন্ধু তার বান্ধবির কাছে প্রেম নিবেদন করলে তাকে শ্বাসরোধ করে মারার চেষ্টা করেন ওপেনহাইমার।
মনোচিকিৎসকেরা তাকে যে মানসিক সুস্থতা দিতে পারেনি তা তিনি পরবর্তীকালে পেয়ে ছিলেন সাহিত্য থেকে এমনটাই মনে করেণ তার জীবনীকাররা। এ সময় থেকে দার্শনিক ও আধ্যাত্মিক বই পড়া তার জীবনে একটি অভ্যেস হয়ে দাঁড়ায়।
১৯৪০ সালে জীববিজ্ঞানী ক্যাটরিন কিটি হ্যারিসনকে বিয়ে করে ওপেনহাইমার। পরমানু অস্ত্রের হুমকি সম্পর্ককে রাজনিতিবিদের আগে বিজ্ঞানীরাই সচেতন হয়েছেন। ১৯৩৯ সালে আলবার্ট আইনষ্টাইন প্রথম মার্কিন সরকারের নেতাদের কাছে এ বিষয়ে চিঠি দেন। প্রথম যখন বোমা তৈরির প্রকল্পের প্রধান বিজ্ঞানী হিসেবে ওপেনহাইমারের নাম প্রস্তাব করা হয় তখন বেশ কিছু আপত্তি উঠেছিল, কিন্তু তার ধ্যান বিশ্বস্ততার কারণে ম্যানহাটন প্রকল্পের সামরিক নেতা জেনারেল লেসলি গ্রোভস তাকে নেবার পক্ষে মত দেন।
যুদ্ধের পর পরমানু বোমা সম্পর্কে তার মত পাল্টে গিয়েছিল। তিনি একে ত্রাস ও আক্রমণের যন্ত্র এবং অস্ত্র নির্মাণ শিল্পকে শয়তানের কাজ বলে আখ্যায়িত করে। ১৯৬০ এর দশকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ওপেনহাইমার বলেছিলেন বিস্ফোরণের পরপরই তার মনে পরে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ভগবত গীতার একটি লাইন। ‘এখন আমি পরিণত হয়েছি সাক্ষাত মৃত্যুতে, বিশ্ব ধ্বংসকারীতে।’ পরবর্তীতে তিনি হাইড্রোজেন বোমারও বিরোধিতা করেছিলেন। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা
এনবিএস/ওডে/সি