ঢাকা, মঙ্গলবার, এপ্রিল ২২, ২০২৫ | ৯ বৈশাখ ১৪৩২
Logo
logo

৩৮ বছর পর পদ ছাড়লেও ক্ষমতা হুন সেনের হাতেই!


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ০২ আগস্ট, ২০২৩, ০৮:০৮ পিএম

৩৮ বছর পর পদ ছাড়লেও ক্ষমতা হুন সেনের হাতেই!

 ৩৮ বছর পর পদ ছাড়লেও ক্ষমতা হুন সেনের হাতেই!

আমি ঘোষণা করছি যে আমি আর প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকবো না। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে পদ থেকে সড়ে দাঁড়ালেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। তার এ ঘোষণা অনেকটা চমক হয়ে আসে সবার কাছে। মাত্র ৩ দিন আগে তার দল কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি আরেকটি বিতর্কিত নির্বাচন এর মাধ্যমে দেশের সবগুলো আসনে বিজয়ী হয়। যা তার ক্ষমতাকে টানা চার দশক পূরণ করার পথে নিয়ে যায়। যদিও গত তেইশে জুলাই হয়ে যাওয়া এ নির্বাচনের সমালোচনা করে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিমা বিভিন্ন দেশে ও সংগঠন এ নির্বাচন সুুষ্ঠু হয়নি বলে বিবৃতি দিয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হুন সেন নানা উপায়ে তার প্রতিপক্ষকে দমন করেছে। এবারও তার যে একমাত্র প্রতিপক্ষ ছিল সেই ‘ক্যান্ডেল লাইট’ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেন তিনি। পরে মে মাসে সেই পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয়।

আর নির্বাচনী অফিস আইনি মারপ্যাচের বিত্তিতে দলটিকে নির্বাচনে অংশ নিতে অবৈধ ঘোষণা করে। এর আগের বারের নির্বাচনেও তিনি আদালতকে ব্যবহার করে সি এন আর পি নামে আরেকটি জনপ্রিয় দল বিলুপ্ত করেন এবং দলটির নেতাদের কারারূদ্ধ বা নির্বাসিত করেন। ফলে এ নির্বাচন হয়ে পরে প্রতিযোগিতাহীন এবং ফলাফল সবাই আগে থেকেই অনুমান করতে পারে। কিন্তু এ আনুষ্ঠানিক নির্বাচনের মাধ্যমে হুন সেনের ক্ষমতা পোক্ত হওয়ার মাত্র ৩ দিনের মাথায় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এলো তার এ ঘোষণা।

যেখানে সত্তর বছর বয়সী হুন সেন বলেছেন আগামী ১০ই অগাস্ট তার বড় ছেলে হুন মানেদকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করা হবে। ২০১৩ সালে হুনসেন ঘোষণা দিয়েছিলেন যে ৭৪ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি কম্বোডিয়া শাসন করতে চান। এরপর ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চান ২০২১ সালে। ভবিষত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছিল তার জ্যৈষ্ঠ পুত্র হুন মানেদ কে। যিনি রাজকীয় কম্বোডিয়ান সেনাবাহিনীর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর আগে হুন মানেদ সিপিপির যুব শাখার প্রধান নিযুক্ত হন। এরপর দলের স্ট্যান্ডিং কমিটিতে আসেন এবং এবার নির্বাচনে একটা আসনে জয় লাভ করেন। ফলে তার প্রধানমন্ত্রী হবার সব রাস্তা  তৈরি হয়ে যায়। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এক কোটি ষাট লাখ জনসংখ্যার দেশ কম্বোডিয়ায় ১৯৮৫ সাল থেকে হুন সেন ক্ষমতায়। তিনি দেশের ভেতরে স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম, অধিকার গোষ্টি, ট্রেড ইউনিয়ন এবং এনজিও এর উপর দমন নিতি চালিয়ে ভিন্ন মত ও বাক স্বাধীনতা হরণ করেছেন এমন কথা হরহামেসাই শোনা যায়।

এখন প্রশ্ন হলো তার সন্তান কি রাজনীতির এ ধারা থেকে দেশকে বের করতে পারবেন নাকি তিনি ও তার বাবার  দেখানো পথেই হাঁটবেন। পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সী হুন মানেদের স্নাতক ও মাস্টার্স যুক্তরাষ্ট থেকে। এরপর ব্রিষ্টাল বিশ^বিদ্যালয় থেকে পি এইচ ডি করেন তিনি। একটা আলোচনা তৈরি হয়েছে যে তিনি হয়ত তার বাবার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে কম্বোডিয়ায় উদয়ের রাজনীতির সূত্রপাত করবে। কিন্তু বিশ্লেষকরা এমন কোন আশা দেখছেন না। বরং প্রধানমন্ত্রীত্ব ছাড়লেও সকল ক্ষমতা হুন সেনের হাতে থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এমন কি মাস খানেক আগেও তিনি এক গণমাধ্যমকে ও পরিষ্কার করে বলেন তার সরকার ও প্রসাশন পরিচালনায় তিনি কোন বদল দেখতে চান না। হুন সেনের বিশ^াস মতে ভিন্ন কিছু করতে যাওয়া মানে চলমান শান্তি ও আগের প্রজন্মের যে অর্জন তাকে বাধাগ্রস্ত করা।

হুনসেন এক ঘোষণায় তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিলেও পার্টির প্রধান থাকছেন এবং তিনি সিনেট প্রসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন এবং রাজা যখন দেশের বাইরে থাকবেন তিনিই হবেন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। ফলে সমালচকরা বলছেন ছেলেকে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসালেও পেছন থেকে সব কল কাঠি তিনিই নাড়বেন । সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি