এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ০৫ জুন, ২০২২, ০১:০৬ পিএম
বডি স্প্রের বিজ্ঞাপনে ‘ধর্ষণের’ উপাদান, ‘শট’ নিয়ে কড়া পদক্ষেপ দিল্লির
একটা ঘর। বিছানায় বসে রয়েছে দম্পতি। দরজায় টোকা না দিয়েই ঢুকে পড়ল চার যুবক। বিছানায় বসে থাকা তরুণকে তাঁরা চেনেন। কিন্তু ব্যক্তিগত মুহূর্তের মধ্যে ওই চারজনের ঢুকে পড়ায় তরুণী হতভম্ব। তারপরই চার জনের মধ্যে থেকে একজন বিছানায় বসা যুবকের উদ্দেশে বললেন, ‘শট নেব।’ তরুণীর মুখে তখন উদ্বেগের চোরাস্রোত বয়ে যাচ্ছে। তারপর দেখা গেল বিছানার পাশে রাখা একটি ছোট্ট টেবিলের উপর রাখা রয়েছে বডি স্প্রে। শিশিটির গায়ে লেখা ‘শট।’ (Body Spray Ad)
এটি একটি বিজ্ঞাপনের দৃশ্য (Body Spray Ad)। এই বডি স্প্রেটিরই পৃথক একটি বিজ্ঞাপনে শপিংমলে একা এক তরুণীর সঙ্গে চার যুবকের বডি স্প্রে কেনার দৃশ্য দেখানো হয়েছিল। যেখানে দেখানো হয়েছিল মলের র্যাকের সামনে ঝুঁকে কিছু জিনিস ট্রলিতে রাখছেন তরুণী। পিছনে দাঁড়ানো চার যুবকের একজন বলছেন, “আমরা চার জন, আর ও একা। কে নেবে শট?’ তরুণী যখন আতঙ্ক ভরা মুখ নিয়ে পিছন ঘুরে দেখছেন তখন ক্যামেরা ফোকাস করছে র্যাকে রাখা একটা ‘শট’-এর শিশিতে।
এই দুটি বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধেই কড়া পদক্ষেপ নিল কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রক।
টুইটার, ইউটিউবকে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বলা হয়েছে, এই বিজ্ঞাপন ভয়ঙ্কর। এখনই তা প্রত্যাহার করতে হবে। বিবেচনা না করে মহিলাদের বিরুদ্ধে এই রকম আপত্তিকর বিজ্ঞাপন কী ভাবে প্রদর্শিত হল তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। টুইটার ও ইউটিউব কর্তৃপক্ষের কাছে সে ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছে।
এই দুটি বিজ্ঞাপন নিয়ে একাধিক সমাজকর্মী, আইনজীবী সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, এই বিজ্ঞাপনে ভরপুর ধর্ষণের উপাদান রয়েছে। মহিলাদের সম্মানের পক্ষেও যা আপত্তিকর। কী ভাবে খোলাবাজারে এই বিজ্ঞাপন চলছে। দেশে কি আইন বলে কিছু নেই। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরকে ট্যাগ করেও সোশ্যাল মিডিয়ায় গত তিন দিন ধরে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন অনেকে।
অনেকের মতে, নেগেটিভ বিজ্ঞাপন করে এ এক ব্র্যান্ড চেনানোর কৌশলও হতে পারে। অনেক বছর আগে সংসদে মহারাষ্ট্রের এক সাংসদ একটি কন্ডোমের বিজ্ঞাপন নিয়ে সরব হয়েছিলেন। তখনও টেলিভিশনে এ ভাবে কনডোমের বিজ্ঞাপন চালু হয়নি। মূলত খবরের কাগজেই তা প্রকাশিত হতো। কিন্তু সংসদের জিরো আওয়ারে কন্ডোম প্রসঙ্গ তোলায় গোটা দেশ জেনে গিয়েছিল ওই নামের একটা কন্ডোম বাজারে এসেছে। পরে জানাজানি হয়েছিল, কন্ডোম প্রস্তুককারক সংস্থার সঙ্গে সাঁট করেই সাংসদ ওই কথা বলেছিলেন। যাতে লোক নামটা জেনে যায়, বিক্রি বাড়ে। অনেকের ধারণা, বডি স্প্রে প্রস্তুতকারক সংস্থাটিও হয়তো ‘নেগেটিভ পাবলিসিটি’র কৌশল নিয়েছিল। নইলে কে জানত, শট নামের একটি সুগন্ধী বাজারে এসেছে।।খবর দ্য ওয়ালের /এনবিএস/২০২২/একে