এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ০২ নভেম্বর, ২০২৩, ০৬:১১ পিএম
জাবালিয়ার ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে ফের ইসরায়েলি হামলা, ১ হাজারের অধিক হতাহত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যাকার জাবালিয়ার ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে মঙ্গলবার রাতের ভয়াবহ হামলার রেশ না কাটতেই আবারও ঘনবসতিপূর্ণ এ শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় নিহত হয়েছেন ৪শ’র অধিক ফিলিস্তিনি।
প্রথম হামলার ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই গত বুধবার আবারও জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার বাসিন্দাদের দক্ষিণে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে এখন সেখানেও একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইহুদী দেশ ইসরায়েল।
মঙ্গলবার রাতে উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলি হামলায় অর্ধশতাধিখ নিহত এবং দেড়শ’ আহত হয়েছেন। ওই হামলায় আল-জাজিরার ব্যুরো অফিসের সম্প্রচার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু আল-কুমসানের পরিবারের ১৯ সদস্যও রয়েছেন। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় গত ২৬ দিনে প্রায় ৮ হাজার ৭৯৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ফিলিস্তিনিদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
উত্তর গাজায় ঢুকে পড়া ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে তুমুল লড়াই চলছে হামাসসহ ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনগুলোর যোদ্ধাদের। এ সময় হামাসের প্রতিরোধের যুদ্ধে মঙ্গল ও বুধবার ১৬ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন বলেও স্বীকার করেছে দেশটি। এ ছাড়া ইসরায়েলি সেনারা এ সময় কয়েকশ’ হামাস যোদ্ধাকে হত্যার দাবি করেছে। ইসরায়েল বলেছে, তারা এ পর্যন্ত হামাসের ১১ হাজার লক্ষ্যস্থলে হামলা চালিয়েছে।
রণাঙ্গনে হামাসের হাতে মার খেয়ে ক্ষিপ্ত ইসরায়েলি বাহিনী উদ্বাস্তু শিবিরের মতো ঘনবসতিপূর্ণ হামলা চালিয়ে নিরীহ নারী-শিশুসহ সাধারণ মানুষের ওপর গণহত্যায় মেতে উঠেছে বলে হামাস সূত্রে বলা হয়েছে।
জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে হামাস যোদ্ধারা লুকিয়ে রয়েছে বলে যে দাবি ইসরায়েল করছে তাকে মিথ্যা বলে নাকচ করে দিয়েছে হামাস। হামাসের সামরিক শাখা জানিয়েছে, তাদের হাতে আটক ৭জন জিম্মি নিহত হয়েছেন এ হামলায়। এ মধ্যে তিনজনের বিদেশী পাসপোর্ট রয়েছে।
গাজায় হামলায় বিধ্বস্ত ঘরবাড়ির ধ্বংসস্তূপে এখনো ২ হাজার ৩০ জনের মতো নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১ হাজার ২০ জন শিশু। হামলার ব্যাপকতা বাড়ায় জীবিতদের উদ্ধারে এখন জোর দিচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশনারের দপ্তর বলেছে, জাবালিয়ায় শরণার্থী শিবিরে হামলা হল ‘মাত্রাতিরিক্ত’ হামলা যা যুদ্ধাপরাধ বলে গণ্য হতে পারে।
গাজার ক্যান্সার চিকিৎসা প্রদানের একমাত্র হাসপাতাল তুর্কিশ-প্যালেস্ট্ইান ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। গাজার অন্য হাসপাতালগুলোও জ্বালানির অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিখ্যাত নাগরিক অধিকার গ্রুপ স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে সমাবেশকারী ছাত্র সংগঠনগুলোর ব্যাপারে তদন্ত করা অথবা নিষিদ্ধ করার দাবিকে প্রতিহত করতে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন(এসিএলইউ) বুধবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এক খোলা চিঠিতে এ আহ্বান জানায়।
ইসরায়েলি নির্বিচার হামলার হাত থেকে গাজার কোন কিছুই রেহাই পাচ্ছেন। চার সপ্তাহের হামলায় উপত্যাকাটির ৫৯টি মসজিদ ধ্বংস হয়েছে। উপত্যাকাটির ১১টি বেকারির মধ্যে এখন ৯টি চালু রয়েছে।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা
এনবিএস/ওডে/সি