ঢাকা, শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Logo
logo

আব্বাসকে জিজ্ঞেস করুন নূপুর শর্মা যা বলেছেন তা ভুল কিনা: মোদির প্রতি ওয়াইসি     


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ২০ জুন, ২০২২, ০২:০৬ পিএম

আব্বাসকে জিজ্ঞেস করুন নূপুর শর্মা যা বলেছেন তা ভুল কিনা: মোদির প্রতি ওয়াইসি     

আব্বাসকে জিজ্ঞেস করুন নূপুর শর্মা যা বলেছেন তা ভুল কিনা: মোদির প্রতি ওয়াইসি     

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল (শনিবার) তার মা হীরাবেনের ১০০তম জন্মদিনে একটি ব্লগ শেয়ার করেছেন, যেখানে তিনি ‘আব্বাস’ নামে একজন ব্যক্তির উল্লেখ করেছেন। মা হীরাবেনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মোদি লিখেছেন, ‘মা সবসময় অন্যদের খুশি দেখে খুশি হন। বাড়িতে জায়গা কম কিন্তু তার হৃদয় অনেক বড়। আমাদের বাড়ি থেকে একটু দূরে একটি গ্রাম ছিল যেখানে আমার বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু থাকতেন। তার ছেলে আব্বাস।’     

‘বন্ধুর অকাল মৃত্যুর পর বাবা আব্বাসকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন। একপ্রকার আব্বাস আমাদের বাসায় থেকেই পড়াশোনা করেছে। আমাদের বাচ্চাদের মতো মা ও আব্বাসের খুব যত্ন নিতেন। ঈদে মা আব্বাসের জন্য পছন্দের খাবার তৈরি করতেন। উৎসবের সময় আশেপাশের কিছু ছেলেমেয়ে আমাদের বাড়িতে এসে খাবার খেতে আসত। তাদেরও আমার মায়ের বানানো খাবার খুব পছন্দের ছিল।’  গতকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডে রয়েছে 'আব্বাস'। আব্বাসকে নিয়ে বিভিন্ন রাজনীতিবিদ মন্তব্য করেছেন। টুইটারে আব্বাসকে নিয়ে এ পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি টুইট হয়েছে।

মজলিশ-ই ইত্তেহাদুল মুসলেমিন (মিম) প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি একটি সভায় আব্বাসের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে আবেদন করেছেন। ওয়াইসি বলেন,  ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি, আপনার বন্ধু আব্বাসকে জিজ্ঞেস করুন, নূপুর শর্মা যা বলেছেন তা আপত্তিকর কিনা?’ 

ওয়াইসি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি আব্বাসের কথা বলেছেন। আট বছর পর প্রধানমন্ত্রীর তাঁর বন্ধুর কথা মনে পড়ল। খুব ভালো। আগে আপনার এমন বন্ধু ছিল জানতাম না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার বন্ধু আব্বাস তার বাবার মৃত্যুর পর তার বাড়িতে থাকতে শুরু করেছিল। ঈদের দিন তার জন্য খাবার তৈরি করা হয়েছিল।’  

ওয়াইসি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে আবেদন করতে চাই যে আব্বাস সাহেব যদি থাকেন তবে তাকে ডাকুন। আব্বাস সাহেবকে ডেকে ওয়াইসি ও আলেমদের বক্তব্য শোনান। তাকে জিজ্ঞাসা করুন এই লোকেরা সত্য বলছে নাকি মিথ্যা বলছে? আব্বাসের অন্তরে যদি আব্বাস আলমদারের ভালোবাসা থাকে, তাহলে তিনি বলবেন যে, এরা সবাই সত্যি কথা বলছেন।’     

প্রধানমন্ত্রী মোদিকে উদ্দেশ্য করে ওয়াইসি আরও বলেন, ‘আপনি আব্বাসকে জিজ্ঞেস করুন, আর আপনি যদি তা না করেন, আমাকে ঠিকানা না দিন, আমি তার কাছে যাবো এবং আমি তাকে জিজ্ঞেস করব নবী মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে নূপুর শর্মা যা বলেছেন তা আপত্তিজনক কিনা?’  ওয়াইসি ছাড়াও কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, আরজেডি’র মতো দলের নেতারাও টুইটারে আব্বাসকে নিয়ে টুইট করেছেন।    

এ দিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওই নিবন্ধের পরে ‘আব্বাস’ নামটি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে এবং 'আব্বাস' সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড হয়েছে। গণমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়েছে।   

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে উদ্ধৃত করে বিবিসি হিন্দি জানিয়েছে, সংবাদপত্রটি আব্বাস সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মোদির ভাইদের সঙ্গে কথা বলেছে। এতে লেখা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাইরা বলেছেন, আব্বাস মিয়াঞ্জিভাই রামসানা মোমিন গুজরাটের মেহসানা জেলার কেসিম্পা গ্রামে থাকতেন। তাকে তাদের 'পরিবারের সদস্য' হিসেবে স্মরণ করেন। গণমাধ্যমে প্রকাশ, আব্বাস প্রধানমন্ত্রী মোদির ছোট ভাই পঙ্কজভাইয়ের সহপাঠী ছিলেন।

আব্বাসকে একজন ‘ভালো মানুষ’ হিসেবে বর্ণনা করে পঙ্কজভাই বলেছেন, তিনি দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন এবং তিনি হজ যাত্রাও করেছিলেন। তিনি বলেন,  ‘আব্বাসের বাবা এবং তার বাবা বন্ধু ছিলেন। তাদের গ্রামে কোনো হাইস্কুল ছিল না এবং প্রাথমিক শিক্ষার পর তার পড়াশোনা ছাড়া উপক্রম হয়েছিল। তারপরে আমার বাবা তার বাবাকে আব্বাসকে তার সাথে পাঠাতে রাজি করান যাতে সে তার পড়াশোনা শেষ করতে পারে।’ 

পঙ্কজভাই বলেন, আব্বাস আমাদের সঙ্গে থেকে অষ্টম এবং নবম শ্রেণির পড়াশোনা শেষ করেছিল। তিনি বলেন, আব্বাসের বয়স এখন ৬৪ বছর। তিনি গুজরাট সরকারের দ্বিতীয় শ্রেণীর আধিকারিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং বর্তমানে তিনি অবসর নিয়েছেন। তিনি জানান, গত সপ্তাহে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় ছেলের সাথে থাকার জন্য সিডনিতে চলে গেছেন। 

একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বড় ভাই সোমাভাই বলেন, ‘তিনি পঙ্কজের সহপাঠী ছিলেন। প্রায় দু’বছর তিনি আমাদের বাড়িতে ছিলেন।’ পঙ্কজভাই বলেন, ‘আব্বাস ছিলেন পরিবারের একজন সদস্যের মতো। আমার মা উৎসবে তার জন্য খাবার রান্না করতেন। মুহররমের দিনে তিনি আমার একটি কালো জামা পরতেন’ বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী মোদির বড় ভাই সোমাভাই।খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে