ঢাকা, বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৭, ২০২৫ | ৩ বৈশাখ ১৪৩২
Logo
logo

‘লজ্জা’ নাটক নিষিদ্ধ করল মমতা-সরকার!


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৭:১২ পিএম

‘লজ্জা’ নাটক নিষিদ্ধ করল মমতা-সরকার!


‘যারা দাঙ্গা বাঁধাতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে, শিল্প সাহিত্যকে নিষিদ্ধ করা হয় কেন?' প্রশ্ন লেখিকার। পালটা জবাব ফিরহাদ হাকিমের।
বিতর্ক আর তসলিমা নাসরিন, পরস্পরের সমার্থক শব্দ বললেও অত্যুক্তি করা হয় না। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিদিনই সোশ্যাল মিডিয়ায় গর্জে উঠেন লেখিকা। ইউনূস সরকারের সমালোচনায় মুখর হন, এবার তাঁর নিশানায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার।

বাম সরকারের আমলে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন তসলিমা, এবার মা-মাটি-মানুষের সরকার নিষিদ্ধ করল তসলিমার ‘লজ্জা’ উপন্যাস অবলম্বনে মঞ্চস্থ হতে চলা নাটক। সেই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় গর্জন লেখিকার। বুদ্ধদেবের আমলে তাঁর উপন্যাস ‘দ্বিখণ্ডিত’ ব্যান করা হয়েছিল, দু-দশকে বদল হয়নি ছবির! 

ফেসবুকের দেওয়ালে তসলিমা নাসরিন লেখেন,'মমতা ব্যানার্জি আজ আমার লজ্জা নাটকটি পশ্চিমবঙ্গে নিষিদ্ধ করলেন। গোবরডাঙ্গায় আর হুগলির পাণ্ডুয়ার নাট্যউৎসবে লজ্জা নাটকটি মঞ্চস্থ হওয়ার কথা ছিল। দু'মাস যাবৎ বিজ্ঞাপন যাচ্ছে নাট্যউৎসবের। আর আজ, বলা নেই কওয়া নেই, হঠাৎ মমতা ব্যানার্জির পুলিশ এসে জানিয়ে দিল, সব নাটক মঞ্চস্থ হবে, শুধু লজ্জা ছাড়া। নবপল্লী নাট্যসংস্থা দিল্লিতে তিনবার নাটকটি মঞ্চস্থ করেছে। তিনবারই প্রেক্ষাগৃহ পূর্ণ ছিল।'

তিনি আরও লেখেন, 'পুলিশ জানিয়েছে লজ্জা মঞ্চস্থ হলে মুসলিমরা নাকি দাঙ্গা বাঁধাবে। মুসলিমরা দাঙ্গা বাঁধাবে এই অজুহাতে সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে লেখা আমার মেগাসিরিয়াল 'দুঃসহবাস' , যেটি টেলিভিশনের আকাশ ৮ চ্যানেল থেকে সম্প্রচার করার কথা ছিল, সেটি বন্ধ করে দিয়েছিলেন রাজ্য সরকার। লজ্জার ঘটনা বাংলাদেশের। কী কারণে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমরা বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে দাঙ্গা বাঁধাবে, আমার বোধগম্য নয়। মুসলিমরা দাঙ্গা বাঁধাবে এই অজুহাতে আমাকে এক সময় পশ্চিমবঙ্গ থেকেও বের করে দেওয়া হয়েছিল।' 

কড়া ভাষায় তসলিমার প্রশ্ন, ‘যারা দাঙ্গা বাঁধাতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে, শিল্প সাহিত্যকে নিষিদ্ধ করা হয় কেন? শিল্পী সাহিত্যিকের কন্ঠরোধ করা হয় কেন? এই প্রশ্নটি আর কত যুগ একা একা আমিই করে যাব? আর কারও দায়িত্ব নেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করার?’

এই বাংলায় যাতে কোনওরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেই কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, মনে করা হচ্ছে। যদিও গোটা বিষয় নিয়ে রীতিমতো বিস্ফোরক মমতার-মন্ত্রী। কলকাতার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এই ঘটনা সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেন, ‘ধুত ও আবার মানুষ নাকি। ধরি না ওকে।’ এর আগে ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়কের রোষের মুখে পড়তে হয়েছিল লজ্জা-র লেখিকাকে। তসলিমা অভিযোগ করেছিলেন, মাদ্রাসায় জঙ্গি কার্যকলাপের। পালটা হুমায়ুন কবীর তাঁকে ‘শিক্ষিত শয়তান’ বলে বিদ্রুপ করেন।