ঢাকা, বুধবার, এপ্রিল ২, ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Logo
logo

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিল জাতিসংঘ: ফলকার তুর্কের বক্তব্য প্রকাশ্যে


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ০৭ মার্চ, ২০২৫, ০৫:০৩ পিএম

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিল জাতিসংঘ: ফলকার তুর্কের বক্তব্য প্রকাশ্যে

 

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে গণবিক্ষোভে জড়ানোর ব্যাপারে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছিল। তিনি বলেন, যদি সেনাবাহিনী এই বিক্ষোভ দমনে ভূমিকা রাখে, তবে তারা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণের সক্ষমতা হারাতে পারে।

বিবিসির জনপ্রিয় ‘হার্ডটক’ পডকাস্টে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গত ৫ মার্চ তিনি এ কথা বলেন। তুর্ক জানান, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে ব্যাপক ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন জাতিসংঘ সরাসরি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছে বার্তা পাঠায়। এতে বলা হয়, ‘যদি তারা দমন-পীড়নের সঙ্গে যুক্ত হয়, তবে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে তাদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে।’ এই সতর্কতার পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতির মোড় নেয় এবং মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

হার্ডটকের উপস্থাপক স্টিফেন স্যাকারের এক প্রশ্নের জবাবে ফলকার তুর্ক বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে শিক্ষার্থীরা বড় ধরনের আন্দোলনে নামে। তারা সরকার পরিচালনার ধরন নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিল। সেই সময় ব্যাপক দমন-পীড়ন চলে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে আমরা মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর নিবিড় পর্যবেক্ষণ রেখেছিলাম এবং বারবার আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলাম।’

জাতিসংঘের হাইকমিশনার আরও জানান, ড. ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য একটি তথ্য-উদ্ধার মিশন পাঠানোর অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘এই মিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমি যখন গত বছর বাংলাদেশ সফর করি, তখন ছাত্ররা আমাদের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।’

গত বুধবার (৫ মার্চ) জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের এক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে চলা বিক্ষোভ দমনে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। জাতিসংঘের মতে, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশে জবাবদিহি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্র ও নাগরিক সমাজের মধ্যে সংলাপ জরুরি। মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের বিচার করা প্রয়োজন।’

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও এই আলোচনায় অংশ নেন এবং জাতিসংঘের প্রতিবেদনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।