ঢাকা, বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৩, ২০২৫ | ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১
Logo
logo

পাকিস্তানে ট্রেন হাইজ্যাকের পেছনে বেলুচ লিবারেশন আর্মি! তারা কেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করছে?


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ১২ মার্চ, ২০২৫, ০৪:০৩ পিএম

পাকিস্তানে ট্রেন হাইজ্যাকের পেছনে বেলুচ লিবারেশন আর্মি! তারা কেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করছে?

 

মঙ্গলবার পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন হামলার দায় স্বীকার করেছে বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ), একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী। এই হামলায় শতাধিক যাত্রী জিম্মি হয়ে পড়েন, যখন ট্রেনটি বেলুচিস্তানের একটি সুড়ঙ্গে হাইজ্যাক করা হয়। বিএলএ জানিয়েছে, তারা এই হামলার মাধ্যমে পাকিস্তান সরকারের কাছে নিজেদের রাজনৈতিক দাবির প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করতে চেয়েছে।

১৯৪৮ সালে বেলুচিস্তানের একত্রীকরণের পর থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার সংগ্রাম করে আসছে বিএলএ। পাকিস্তান এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই তাদের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এই গোষ্ঠীটি দীর্ঘদিন ধরে বেলুচিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং জনগণের অধিকার নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছে।

বিএলএ’র দাবি, ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে জোর করে একত্রীকরণের পর থেকে তারা বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা ও সম্পদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। তারা পাকিস্তানকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বেলুচ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছে।

২০০০ সালের শুরুর দিকে বিএলএ পাকিস্তান সরকারকে চ্যালেঞ্জ করে বেলুচিস্তানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করার দাবি তোলে। এরপর থেকে পাকিস্তান শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। বেলুচিস্তানের খনিজ সম্পদ লুটের প্রতিবাদে এই বিদ্রোহ চলছে। বিশেষ করে, চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (CPEC) প্রকল্পের কারণে বেলুচিস্তান আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে।

বিএলএ’র হামলার লক্ষ্য ছিল সিপিইসি প্রকল্প এবং পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী। তাদের হামলায় প্রায়ই চিনা নাগরিকদের টার্গেট করা হয়, যারা এই প্রকল্পগুলোর অংশ। বিস্ফোরণ, গুমখুন এবং নাশকতা চালিয়ে বিদ্রোহীরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নিজেদের প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

বিএলএ বর্তমানে সেল-ভিত্তিক গঠন ও বিভিন্ন শাখায় বিভক্ত হয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে আসলাম বালোচের নাম উল্লেখযোগ্য, যিনি ২০১৮ সালে আফগানিস্তানে নিহত হন। পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন এই গোষ্ঠীটিকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিদ্রোহ ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ আকার নিতে পারে, যা পাকিস্তানের জন্য এক গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।