এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ২৬ মার্চ, ২০২৫, ০৬:০৩ পিএম
দক্ষিণ কোরিয়ায় ভয়াবহ দাবানলে এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন আরও ২০ জনের বেশি। দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাঁচটি প্রধান এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে আগুন, যার ফলে হাজারো মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক হাজার দমকলকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
দাবানলের তাণ্ডবে জনজীবন বিপর্যস্ত
শুষ্ক আবহাওয়া এবং প্রবল বাতাসের কারণে দাবানল ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বিভিন্ন এলাকা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, এমনকি কারাগার থেকে বন্দিদের সরিয়ে নিতে হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক সু এক বিবৃতিতে বলেছেন, "এটি আমাদের ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ দাবানল। সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।"
উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনীও মোতায়েন
দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, উইসেয়ং কাউন্টি থেকে শুরু হওয়া দাবানলে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, অন্যদিকে সানছং কাউন্টিতে আরও চারজনের প্রাণহানি ঘটেছে। মৃত্যুবরণকারীদের বেশিরভাগের বয়স ৬০ থেকে ৭০ বছর। আগুন নিয়ন্ত্রণে ৪,৯১৯ জন দমকলকর্মী, কয়েকশ পুলিশ সদস্য এবং সামরিক বাহিনীর বিশেষ ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ৮৭টি অগ্নিনির্বাপক হেলিকপ্টারও কাজ করছে।
ইতিহাস ও ঐতিহ্যও হুমকির মুখে
দাবানলের ভয়াবহতায় ইউনেস্কো ঘোষিত বেশ কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। এনদং শহরের কাছে হাও গ্রাম ও বায়ুংসান কনফুসিয়ান একাডেমির নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে ইতোমধ্যেই ৬৮১ সালে নির্মিত গুন মন্দির পুড়ে গেছে, যা কোরিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অপূরণীয় ক্ষতি।
সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোকে ‘বিশেষ দুর্যোগপূর্ণ অঞ্চল’ ঘোষণা করেছে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নিচ্ছে। এখন পর্যন্ত দাবানলে ৩৭ হাজার একরেরও বেশি এলাকা পুড়ে গেছে। তবে শুষ্ক আবহাওয়া অব্যাহত থাকায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসতে আরও সময় লাগতে পারে।