এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ০৮ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:০৪ এএম
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য কমিশনার মারোস সেফকোভিক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ১৫ এপ্রিল থেকে মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্ক কার্যকর করা হবে। যদিও ইইউ এখনও আলোচনার জন্য প্রস্তুত, কিন্তু ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি বলে তিনি জানান।
কী ঘটতে যাচ্ছে?
১৫ এপ্রিল থেকে ইইউ মার্কিন পণ্যে জবাবি শুল্ক আরোপ করবে
হার্লে ডেভিডসন মোটরসাইকেল, বোরবন হুইস্কি, লেভিস জিন্সসহ ২৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য এই তালিকায় রয়েছে
ইইউর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ব্যবস্থা পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই
সেফকোভিক স্পষ্ট বলেছেন, "ভ্যাট আমাদের আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এটি আলোচনার বিষয়ই হতে পারে না।" এই মন্তব্য এসেছে হোয়াইট হাউসের ভ্যাট ব্যবস্থা পরিবর্তনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে।
টেক জায়ান্টদের বাজারে ধস
এদিকে, মার্কিন শেয়ারবাজারে 'ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেন' টেক কোম্পানিগুলোর অবস্থা শোচনীয়। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর শেয়ার মূল্য ধসে পড়েছে:
টেসলার শেয়ার ৭% কমে ২২৩ ডলারে
অ্যাপল ৪.৮% নিচে, এক বছরের সর্বনিম্নে
অ্যালফাবেট ও মাইক্রোসফট ১.৫% থেকে ৪.৮% পর্যন্ত কমেছে
এই সাত কোম্পানি মিলে ২০২৪ সালের শীর্ষ অবস্থান থেকে ৬ ট্রিলিয়ন ডলার মার্কেট মূল্য হারিয়েছে
কেন এই ধস?
বিশ্লেষকরা কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন:
১. বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক
২. সুদের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা
৩. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে বিনিয়োগের ধীরগতি
৪. ভোক্তা ব্যয়ের উপর চাপ
মার্কিন অর্থনীতিতে প্রভাব
এই ধস শুধু বড় বিনিয়োগকারীদেরই ক্ষতি করছে না:
সাধারণ কর্মচারীদের স্টক অপশনের মূল্য কমছে
রিটায়ারমেন্ট ফান্ডের উপর নেতিবাচক প্রভাব
টেক সেক্টরে নতুন চাকরি সৃষ্টি হ্রাস
ইইউ-মার্কিন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ
সেফকোভিকের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, ইইউ আর মার্কিন একতরফা সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না:
"আমরা আলোচনায় আগ্রহী, কিন্তু আমাদের স্বার্থ রক্ষায় আমরা দৃঢ়।"
বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের অনমনীয় অবস্থান এবং ইইউর জবাবি পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে।
সাধারণ মানুষের জন্য করণীয়
বাজারের এই অস্থিরতায় বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন:
বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করুন
বৈচিত্র্যপূর্ণ বিনিয়োগ কৌশল গ্রহণ করুন
অর্থ সঞ্চয়ে গুরুত্ব দিন
বাজারের অবস্থা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন
১৫ এপ্রিলের পর কী হয় তা এখন সবারই চোখ রাখার বিষয়। এই বাণিজ্য যুদ্ধ কি সমঝোতায় পৌঁছাবে, নাকি বিশ্ব অর্থনীতিকে নতুন সংকটের দিকে ঠেলে দেবে - সময়ই তা বলবে!