ঢাকা, বুধবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৫ | ৩ বৈশাখ ১৪৩২
Logo
logo

বাণিজ্য যুদ্ধের জয়ী কেউ নয়: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফরে শি জিনপিংয়ের বার্তা


এনবিএস ওয়েবডেস্ক     প্রকাশিত:  ১৪ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম

বাণিজ্য যুদ্ধের জয়ী কেউ নয়: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফরে শি জিনপিংয়ের বার্তা

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সফর শুরু করতে যাচ্ছেন, আর সফরের প্রাক্কালে এক স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন— "শুল্ক ও বাণিজ্য যুদ্ধ কারও জন্যই বিজয় বয়ে আনে না।"

ভিয়েতনামের সরকারি পত্রিকা 'Nhan Dan'-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে শি বলেন, আজকের বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে একতরফা সিদ্ধান্ত ও সুরক্ষাবাদ কেবল অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। তাই বিশ্ব অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হলে সবার অংশগ্রহণে একটি বিস্তৃত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈশ্বিক বাণিজ্যিক কাঠামো গড়ে তোলা জরুরি।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, "শুল্ক যুদ্ধ ও সুরক্ষাবাদ কোনো টেকসই সমাধান নয়। বরং বহুপক্ষীয় বাণিজ্যিক ব্যবস্থাকে সুরক্ষা দেওয়া, বৈশ্বিক উৎপাদন ও সরবরাহ চেইনের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং একটি উন্মুক্ত ও সহযোগিতাপূর্ণ আন্তর্জাতিক পরিবেশ নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।"

শি আরও বলেন, চীন নিজের উচ্চমানের উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্বকে আরও সুযোগ দেবে। বাণিজ্যিক সহযোগিতার মাধ্যমে চীন অন্য দেশের সঙ্গে যৌথ উন্নয়নে বিশ্বাস করে এবং এ নীতিতেই তারা অটল থাকবে।

এই সফরের অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট শি প্রথমে ভিয়েতনামে পৌঁছাবেন, এরপর যাবেন মালয়েশিয়া এবং সফরের শেষ গন্তব্য হবে কম্বোডিয়া। এই তিন দেশই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার।

এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে বাণিজ্যিক উত্তেজনা চরমে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এরইমধ্যে বিশ্বের বহু দেশের ওপর ১০ শতাংশ সাধারণ শুল্ক আরোপ করেছেন, যার মধ্যে চীন অন্যতম। এর পাশাপাশি গাড়ি, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসানো হয়েছে।

চীনের রপ্তানির ওপর বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে, যা এই অঞ্চলের দেশগুলোকে আরও বেশি চীনের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য করছে।

আসিয়ান (ASEAN) অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হচ্ছে চীন। ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়ার সঙ্গে চীনের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুত বাড়ছে।

বিশেষ করে ভিয়েতনাম চীনা পণ্যের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হিসেবে উঠে এসেছে, ২০২৪ সালে দেশটি চীন থেকে ৩০ শতাংশ বেশি আমদানি করে মোট আমদানির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

শি জিনপিংয়ের এ সফর তাই শুধু কূটনৈতিক সৌজন্য নয়, বরং অর্থনৈতিক আস্থার বার্তা নিয়ে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক-নীতির অনিশ্চয়তার মাঝে চীন নিজেকে অঞ্চলের নির্ভরযোগ্য বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে।

এই সফর থেকে আশা করা হচ্ছে, আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে এবং একটি নতুন যুগের সূচনা হবে যেখানে সহযোগিতা থাকবে কেন্দ্রবিন্দুতে, প্রতিযোগিতা নয়। খবর আলজাজিরার

#চীন #শিজিনপিং #দক্ষিণপূর্বএশিয়া #বাণিজ্যযুদ্ধ #আন্তর্জাতিকবাণিজ্য