ঢাকা, সোমবার, এপ্রিল ২১, ২০২৫ | ৮ বৈশাখ ১৪৩২
Logo
logo

ঢাকা-ওয়াশিংটন আলোচনায় নির্বাচন, শুল্ক ও রোহিঙ্গা ইস্যু


এনবিএস ওয়েবডেস্ক     প্রকাশিত:  ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম

ঢাকা-ওয়াশিংটন আলোচনায় নির্বাচন, শুল্ক ও রোহিঙ্গা ইস্যু

বাংলাদেশ গত বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও বেশি রাজনৈতিক ও মানবিক সহায়তা চেয়েছে, পাশাপাশি উচ্চ শুল্কের বিষয়টিও উত্থাপন করেছে। পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন জানান, "আমরা রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করেছি," এবং আগামী নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি নিকোল অ্যান চুলিক ও অ্যান্ড্রু আর হেরাপের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসাইন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান এবং পররাষ্ট্র সচিবের সাথে পৃথক বৈঠক করে পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন। উভয় পক্ষই বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্বকে "নতুন উচ্চতায়" নেওয়ার জন্য "দৃঢ় প্রতিশ্রুতি" ব্যক্ত করেছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব জসিম বলেন, তারা চলমান সংস্কার বিষয় এবং অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা করেছেন। বাংলাদেশের কর্মপরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দু হলো যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি পণ্য যেমন তুলা, গম, ভুট্টা ও সয়াবিনের আমদানি বৃদ্ধি, যা মার্কিন কৃষকদের জন্য সুবিধা বয়ে আনবে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানির উপর সর্বনিম্ন শুল্ক প্রযোজ্য।

প্রধান উপদেষ্টা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর ও মেডিকেল সরঞ্জামের মতো শীর্ষ মার্কিন রপ্তানি পণ্যে শুল্ক কমানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এছাড়া তুলার জন্য আলাদা শুল্কমুক্ত বন্ডেড গুদাম নির্মাণ করা হবে যাতে বাজারে দ্রুত পণ্য পৌঁছানো যায়। বাণিজ্য উপদেষ্টার পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির কাছে বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপের বিস্তারিত বিবরণসহ একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, "আমার আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউএসটিআর, বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র দপ্তরের সাথে আরও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা scheduled আছে।"

পররাষ্ট্র সচিবের সাথে বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মূল ক্ষেত্রগুলো যেমন বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উন্নয়ন সহযোগিতা ও জনসংযোগের পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকত নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টার চিঠির কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর জন্য সরকার কয়েকটি পদক্ষেপ বিবেচনা করছে। মার্কিন পক্ষ জানিয়েছে যে ৯০ দিন খুব কম সময় এবং ০৯ জুলাই ২০২৫-এর আগে সমস্যা সমাধানের জন্য কংক্রিট পদক্ষেপ নেওয়া ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশ ৯০ দিনের এই বিরতিকে থামানো হিসেবে দেখছে না এবং এই সময়কে উভয় দেশের mutual স্বার্থে নতুন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য stake holders-এর সাথে আলোচনার মাধ্যমে উপায় খুঁজে বের করতে সক্রিয়ভাবে ব্যবহার করছে। তিনি শ্রম মান উন্নয়নের জন্য দেশের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

ইউএসএইড ফান্ডিং পুনর্বিবেচনার অনুরোধ

পররাষ্ট্র সচিব জসিম স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে সম্প্রতি ইউএসএইড ফান্ডিং কাটছাঁট পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ করেন এবং বাংলাদেশকে ইউএস ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সহায়তা চান। মার্কিন পক্ষ এ বিষয়ে অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন বলে জানান।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গাদের নতুন আগমন উল্লেখ করে তিনি নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন রোহিঙ্গা সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ও অংশীদারিত্ব কামনা করেন। মার্কিন পক্ষ বাংলাদেশে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রশংসা করেন এবং এই প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকার আশ্বাস দেন।

পররাষ্ট্র সচিব সরকারের ১১টি সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে গৃহীত উদ্যোগগুলোর কথা তুলে ধরেন। সফরকারী মার্কিন প্রতিনিধিদল সরকারের সংস্কার পদক্ষেপের প্রশংসা করেন এবং এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স ও অন্যান্য কূটনীতিকগণও উপস্থিত ছিলেন। খবর ইউএনবির

#বাংলাদেশ_যুক্তরাষ্ট্র #রোহিঙ্গা_সংকট #বাণিজ্য_শুল্ক #দ্বিপক্ষীয়_সম্পর্ক #নির্বাচন_ইস্যু