এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম
সুন্দরবনের উপকূলীয় অঞ্চল বাগেরহাটের শরণখোলায় এবার পানির অভাবে বোরো ধান চাষ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সাউথখালী ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের কৃষকরা ফাটল ধরা জমির দিকে তাকিয়ে এখন হতাশ। যেখানে একসময় সবুজ ধানের চারা দোল খেত, সেখানে এখন পড়ে আছে শুধু শুকনো মাটি আর ধানের গুড়ি।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, "গত বছর ৬ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছিলাম। এবার এক বিঘাতেও পানি পাইনি। আমাদের প্রধান পানির উৎস খালগুলো ভরাট হয়ে গেছে।" তার মতো শতাধিক কৃষক এবার ধান চাষই করতে পারেননি।
সমস্যার মূল কারণ হলো এলাকার খাল ও জলাধারগুলো ক্রমাগত ভরাট হয়ে যাওয়া। কিছু ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে খালের স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার স্বীকার করেন, "পানি সরবরাহ না থাকলে আমরা কৃষকদের কীভাবে সাহায্য করব? খাল পুনঃখনন এবং সেচ সুবিধা বাড়ানো জরুরি।"
এ অবস্থায় কৃষকরা বিকল্প পন্থা খুঁজছেন। কেউ কেউ শ্যালো মেশিন দিয়ে দূরের নদী থেকে পানি আনতে চেষ্টা করছেন, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কৃষাণী রহিমা বেগম বলেন, "পানির অভাবে এবার ধান না করে কিছু সবজি চাষ করেছি, কিন্তু তা দিয়ে পরিবারের খরচ চলবে না।"
কৃষি বিশেষজ্ঞ ড. মো. আলীমুজ্জামান সতর্ক করে বলেন, "এভাবে চলতে থাকলে শুধু বোরো নয়, সব ধরনের ফসল উৎপাদনই হুমকির মুখে পড়বে। জলাব্যবস্থাপনা উন্নয়ন ছাড়া উপকূলীয় কৃষি রক্ষা করা যাবে না।"
স্থানীয়রা দাবি করছেন অবিলম্বে খাল পুনঃখনন, সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং কৃষকদের জন্য জরুরি সহায়তার। অন্যথায় শুধু কৃষকই নয়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন।
#সুন্দরবন #কৃষি_সংকট #পানি_সমস্যা #খাদ্য_নিরাপত্তা #কৃষক_জীবন