ঢাকা, শনিবার, মার্চ ১৫, ২০২৫ | ১ চৈত্র ১৪৩১
Logo
logo

ডিজিটাল মানবসম্পদই কেবলমাত্র পারবে প্রযুক্তি বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে: মোস্তাফা জব্বার


এনবিএস ওয়েবডেস্ক     প্রকাশিত:  ০৬ জুলাই, ২০২২, ১২:৪১ পিএম

ডিজিটাল মানবসম্পদই কেবলমাত্র পারবে প্রযুক্তি বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে: মোস্তাফা জব্বার

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন,  ডিজিটাল মানবসম্পদ ছাড়া রোবট, এআই কিংবা আইওটিসহ ডিজিটাল  বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব হবে না। আমাদের মানুষ আছে, তাদেরকে সম্পদে পরিণত করতে হবে। প্রচলিত শিক্ষা মানুষকে সম্পদে পরিণত করে না। একজন শিক্ষার্থী যে কোন বিষয়েই লেখা পড়া করুক তার নূন্যতম ডিজিটাল দক্ষতাঅর্জন করতেই হবে। তা না হলে তারা ডিজিটাল যুগের জন্য অযোগ্য হবে। পরিবর্তিত বিশ্বে ডিজিটাল মানবসম্পদই কেবলমাত্র পারবে প্রযুক্তি বিপ্লবের চ‌্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

মন্ত্রী গতকাল রাতে ঢাকায় আইইবি তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগ আয়োজিত এপ্লিকেশন্ অব রোবটিকস এন্ড অটোমেশন বাংলাদেশ টার্গেটিং ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিভিউলেশন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, একটি দেশের বড় শক্তি হচ্ছে সে দেশের মানুষের মেধা ও জ্ঞান। বাংলাদেশের ছেলে মেয়েদের মেধা ও সৃজনশীলতা বিশ্বে অতুলনীয়। তারা উপযুক্ত পরিবেশ পেলে  অভাবনীয় দক্ষতার সাথে জাতীয় অগ্রগতির অগ্রযাত্রায় বিস্ময়কর সফলতা অর্জনে সক্ষম। তিনি বলেন, রোবট, ব্লকচেইন কিংবা অন্য যে কোন প্রযুক্তি আসছে মানুষের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করার জন্য কিন্তু কোন অবস্থাতেই প্রযুক্তি মানুষের বিকল্প শক্তি হতে পারে না। 

তিনি বলেন, আমাদের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অতীতে আমরা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়  এই তিনটি শিল্প বিপ্লবে অংশ গ্রহণই করতে পারিনি। এর ফলে আমরা প্রযুক্তিতে শতশত বছর পিছিয়ে আছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সাড়ে তের বছরে অতীতের পশ্চদপদতা অতিক্রম করে বাংলাদেশকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বা সোস্যাইট ফাইভ জিরো কিংবা ডিজিটাল বিপ্লবের নেতৃত্বের যোগ্য করে বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় উপনীত করেছেন বলে উল্লেখ করেন ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত। 

তিনি আরো বলেন, ৯২ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার বিনা মাশুলে দেয়া বাংলাদেশের সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ প্রত্যাখ্যান করে আর ৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর মহাকাশে স্যটেলাইট উৎক্ষেপণের উদ্যোগ গ্রহণ  করেন। উদ্যোগ নেওয়া হয় ১০ হাজার প্রোগ্রামার তৈরির। ভিস্যাটের মাধ্যমে চালু হয় ইন্টারনেট। প্রত্যাহার করা হয় কম্পিউটারের ওপর ভ্যাট ট্যাক্স। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে ডিজিটাল বিপ্লবের অভিযাত্রা শুরু হয়। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ডিজিটাল  বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু হয়। এর দুই বছর পর ২০১১ সালে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধারণা অংকুরিত হয় এবং ২০১৬ সালে  বিশ্ব অর্থনীতি  ফোরামে তা প্রকাশিত হয়। ইউরোপ কিংবা আমেরিকায় বিদ্যমান মানব সম্পদের ঘাটতি মেটাতে চালকবিহীন গাড়ি কিংবা মানুষ বিহীন পোষাক শিল্প প্রয়োজন কিন্তু আমরা আমাদের বিশাল জনগোষ্ঠীকে যন্ত্রের হাতে ছেড়ে দিতে পারি না। তাদের জীবন জীবিকা ঠিক রেখেই আমাদের প্রযুক্তি বিপ্লবে সামনে এগুতে হবে। ফোরআইআরকে জাপান যথার্থই অমানবিক হিসেবে আখ্যায়িত করে সোস্যাইটি ফাইভ পয়েন্ট জিরো ধারণা নিয়ে কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। 

তিনি বলেন, আমরা রোবট তৈরি করবো এবং আমাদের তৈরি করা রোবট কিংবা যন্ত্র দিয়ে উন্নত বিশ্ব তাদের মানুষের ঘাটতি মেটাবে। মন্ত্রী ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর জাতি বিনির্মাণে অবদান রাখতে প্রকৌশলী  সমাজের দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দেন এবং তিনি তাদেরকে ভূমিকা গ্রহণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানা।

আইইবি তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো: আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে  আইইবি সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো: শাহাদাৎ হোসেন শীবলু, বুয়েট অধ্যাপক ড. শেখ আনোয়ারুল ফাত্তাহ, আইইবি ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো: নুরূজ্জামান প্রমূখ বক্তৃতা করেন।

 বক্তারা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ সমূহ মোকাবেলায় সক্ষমতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।