এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর, ২০২৫, ০২:১০ পিএম

বিরল খনিজের বৈশ্বিক বাজারে চীনের আধিপত্য কমাতে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া একটি বড় চুক্তিতে পৌঁছেছে। ট্রাম্প প্রশাসন এই চুক্তিকে তাদের কৌশলগত পরিকল্পনার মূল অংশ হিসেবে দেখছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ জানান, এই চুক্তি সাড়ে আট বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পে বিনিয়োগের পথ খুলবে। এর ফলে অস্ট্রেলিয়ার খনন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বড় অগ্রগতি হবে এবং দেশটি বিশ্ববাজারে নির্ভরযোগ্য বিকল্প হিসেবে উঠে আসবে।
চুক্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া যৌথভাবে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ থেকেই এই দুই দেশ খনিজ সহযোগিতা বাড়াচ্ছিল। আলবানিজ বলেন, “এই চুক্তি আমাদের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।”
‘অকাস’ প্রকল্প নিয়ে সাম্প্রতিক অনিশ্চয়তা দূর করে ট্রাম্প স্পষ্ট করেছেন, অস্ট্রেলিয়া প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাবমেরিন পাবে।
চীনের আধিপত্যের চ্যালেঞ্জ
বর্তমানে বিরল ধাতু আহরণের ৭০ শতাংশ এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে চীন। এই খনিজগুলো সামরিক প্রযুক্তি, কম্পিউটার চিপ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও নবায়নযোগ্য শক্তির সরঞ্জামের জন্য অপরিহার্য।
চীনের ওপর নির্ভরতা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগত ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে চীন শুল্কবিরোধী অবস্থান নিয়ে সরবরাহ সীমিত করলে যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প ও প্রতিরক্ষা খাত হুমকির মুখে পড়ে।
বাজারে উচ্ছ্বাস
চুক্তির ঘোষণার পর অস্ট্রেলিয়ার খনিজ কোম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্য বেড়েছে। পার্থভিত্তিক আরাফুরা রেয়ার আর্থসের শেয়ার ৮ শতাংশ এবং ইলুকা রিসোর্সেসের শেয়ার ৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
সরকার আশা করছে, এই বিনিয়োগ অস্ট্রেলিয়ার খনিজ প্রক্রিয়াজাতকরণ সক্ষমতা বাড়াবে। যুক্তরাষ্ট্রও নিজস্ব খনিজ প্রক্রিয়াজাতকরণ অবকাঠামো গড়ার পরিকল্পনা করছে।
চীনের বিকল্প গড়তে বড় উদ্যোগ
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় বছরে ১০০ টন উৎপাদনক্ষম গ্যালিয়াম রিফাইনারি নির্মাণে বিনিয়োগ করা হবে। এছাড়া এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ২.২ বিলিয়ন ডলার গুরুত্বপূর্ণ খনিজ প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হবে।
ট্রাম্প প্রশাসন এমপি ম্যাটেরিয়ালস, ট্রিলজি মেটালস ও লিথিয়াম আমেরিকাসের মতো কোম্পানিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে শিল্প নিরাপত্তা ও কাঁচামালের বৈশ্বিক শৃঙ্খল পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে।
চুক্তির পূর্ণ বিবরণ প্রকাশ না হলেও এটি অত্যন্ত কৌশলগত ও সংবেদনশীল। অস্ট্রেলিয়া খনিজ উৎস হিসেবে শক্তিশালী হলেও প্রক্রিয়াজাতকরণে চীনের ওপর নির্ভরশীল। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই চুক্তি শুধু অর্থনৈতিক নয়, চীনের ভূরাজনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় পশ্চিমা জোটের বড় পদক্ষেপ।যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়ার খনিজ চুক্তি