এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৭:১২ পিএম

কারাকাসের রাস্তায় ক্রিসমাসের রঙিন আলো জ্বলছে, ঐতিহ্যবাহী গান বাজছে। বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে, বড়রা অফিসে, দোকান খুলছে – বাইরে থেকে সব স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। কিন্তু এই হাসির মুখোশের নিচে লুকিয়ে আছে ভয়, উদ্বেগ আর হতাশা। অনেকে তো আমেরিকার সম্ভাব্য হামলার ভয়ে এখন থেকেই প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন!
পশ্চিম কারাকাসে একা থাকেন ভিক্টোরিয়া নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। দুই সন্তান দেশ ছেড়ে চলে গেছে। তিনি একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। গত কয়েক মাস ধরে তাঁর জীবনটা অনিশ্চয়তায় ভরা। প্রতিদিনই এমন কিছু ঘটছে যা তাঁর মনের শান্তি কেড়ে নিচ্ছে। কাজকর্ম ঠিকই করেন, কিন্তু রাতে ঘুম আসে না।
“মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে ফোনে খবর দেখতে শুরু করি। তারপর আর ঘুম হয় না,” বললেন ভিক্টোরিয়া। ঘুমের ওষুধ খেতে হয়, কারও সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করে না, শরীরেও অস্বস্তি লাগে।
“এই যুদ্ধটা তো আমাদের সাধারণ মানুষের সঙ্গে নয়। ট্রাম্প আর আমাদের সরকারের মধ্যে ঝামেলা। আমরা শুধু বেঁচে থাকার চেষ্টা করি, কিন্তু এই পরিস্থিতি সবসময় আমাদের পেছনে লেগে থাকে,” বললেন তিনি।
ভেনেজুয়েলার মানুষ পরিশ্রমী আর হাসিখুশি। “আমাদের যা হচ্ছে, তা আমরা কেউই পাওয়ার যোগ্য নই,” বললেন ভিক্টোরিয়া।
ভেনেজুয়েলা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানী ইয়োরেলিস আকোস্তা বলছেন, আমেরিকা-ভেনেজুয়েলা উত্তেজনা দেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যকে ভয়ংকরভাবে প্রভাবিত করছে।
“এই সংকট মোকাবিলার কোনো একটা মাত্র উপায় নেই। কারাকাসের মানুষ আর সীমান্তের তাচিরা-জুলিয়ার মানুষের ভয় এক নয়। দেশের বাইরে থাকা লোকেরাও ভাবছে ভেনেজুয়েলা যেন যুদ্ধে ডুবে গেছে – কিন্তু বাস্তবটা আলাদা,” বললেন তিনি।
কেউ খবর একদম দেখতে চান না, আবার কেউ সারাদিন ফোন-টিভিতে লাগিয়ে থাকেন – ফলে উদ্বেগ আর ঘুমের সমস্যা বাড়ছে। আকোস্তা বলছেন, “খবর দেখতে হবে, কিন্তু বিশ্বাসযোগ্য জায়গা থেকে আর সীমিত সময়ের জন্য। সারাদিন হাইপারকানেকটেড থাকলে চলবে না। বিরতি নিন, হাঁটাহাঁটি করুন, শ্বাস নিন আর নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখুন।”
তবে অনেকে শান্ত থাকার চেষ্টা করছেন। ইয়ানিৎজা আলবারানের মতো অনেকে ১ ডিসেম্বর মাদুরোর সমর্থনে মিছিলে গিয়েছেন। তিনি বলছেন, “আমরা স্বাধীনতা, শান্তি আর বিপ্লবের পক্ষে। আমাদের প্রেসিডেন্ট এটাই প্রতিনিধিত্ব করেন।”