ঢাকা, বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৩, ২০২৫ | ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Logo
logo

বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে ফিরিয়ে এনেছেন মুজিবকন্যা


মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ   প্রকাশিত:  ২২ এপ্রিল, ২০২২, ০২:০৪ এএম

বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে ফিরিয়ে এনেছেন মুজিবকন্যা

বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে ফিরিয়ে এনেছেন মুজিবকন্যা

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিঃসন্দেহে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে আবার ফিরিয়ে এনেছেন। তিনি যখন রাজনীতিতে যোগদান করেন, দেশে ফেরত আসার পরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। এই হাল ধরার পর থেকেই আমরা দেখেছি যে তিনি দেশকে যেমন স্বার্থকতার দিকে নিয়ে গেছেন, ঠিক তার দলকেও স্বার্থকতার দিকে নিয়ে গেছেন। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি যে কৌশল গ্রহণ করেছেন, মূলত বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত যে কাজগুলো ছিলো, সমৃদ্ধ ও সুখী বাংলাদেশে তৈরি করার ক্ষেত্রে সেখানে তিনি সবচেযে বড় অবদান রেখেছেন।

বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে রাখতে সক্ষম হয়েছেন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিকশিত করতে সক্ষম হয়েছেন। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে একসময় তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে যারা বাংলাদেশকে পরিচিত করেছিলো, তারাই এখন বাংলাদেশকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি মানুষের জীবন-যাত্রার মান অনেক উন্নত হয়েছে। আন্তর্জাতিক হিসেবে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ২ শত ২৭ ডলারে পৌঁছেছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি বাংলাদেশে তার অবকাঠামোগত উন্নয়নে যেসব মেগাপ্রজেক্ট হাতে নিয়েছে, তার মধ্যে মানুষ সবচেয়ে বেশি উদ্বেলিত হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণে। এই সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে শেখ হাসিনা অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে অত্যন্ত সফল ও সাহসিকার সঙ্গে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে এতো বড় সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশকে বিশে^র কাছে নতুন ভাব-মূর্তিতে পৌঁছে দিয়েছেন।

বাংলাদেশে যখন বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের উত্থান এবং তারা যখন হত্যায় মেতে উঠলো, বিভিন্ন জায়গায় বোমা বিস্ফোরণ করলো সেখানে তিনি জঙ্গি দমনের যে সুস্পষ্ট ও শক্ত কৌশর শেখ হাসিনা নিয়েছিলেন তার ফলে আজকে বাংলাদেশ জঙ্গিমুক্ত না হলেও জঙ্গি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমর্থ হয়েছেন এবং বাংলাদেশের জনগণ এখন নিরাপদে বসবাস করছেন।

করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কৌশল নিয়েছেন এবং দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, তার ফলে বাংলাদেশ এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। খুব গভীরভাবে আমাদের দেশে করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণ কমাতে সক্ষম হয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষের জন্য তিনি যে সময়ে টিকার ব্যবস্থা করেছেন, যখন সরা বিশে^ টিকা দুর্লভ ছিলো। সেখানে তার কূটনীত খুব পরিষ্কারভাবে কাজ করেছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভাবমূর্তি উন্নয়নে ব্যক্তিগতভাবে তার যে ভূমিকা ছিলো সেটি হচ্ছে মানবিকতার পক্ষে দাঁড়ানো। সেক্ষেত্রে আমরা দেখেছি মিয়ানমার থেকে জোর করে বের করে দেওয়া মানুষ যারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে চেয়েছিলো তাদের তিনি আশ্রয় দিয়েছেন এবং তাদের মেইন্টেইন করছেন। যার ফলে তাকে সবাই ‘মানবিকতার মা’ বলে উপাধিতে ভূষিত করেছে।

যদি আমি আন্তর্জাতিক বিশে^র কথা বলি, বাংলাদেশ এখন সক্ষম রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিক শান্তি স্থাপনে যেমন ভূমিকা রেখে চলেছে, ঠিক তেমনি জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাংলাদেশের ভূমিকা তৃতীয় বিশ^ থেকে একটি লিডিং পর্যায়ে আছে। এই নেতৃত্বের পর্যায়ে তাকে চ্যাম্পিয়ান অব দ্য আর্থ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে এবং আগামীতেও পৃথিবীকে জলবায়ুর ঝুঁকি থেকে মুক্ত করার জন্য তার ভূমিকার বিষয়টি সবাই আশা করে। বিশ^নেতা জলবায়ু সম্মেলনের আগে তার সঙ্গে পারস্পারিক যোগাযোগ করেন, কীভাবে কৌশল বিনির্মাণ করা যায় এবং তাকেও অনেক দায়িত্বগ্রহণ করতে বলা হয়। সেক্ষেত্রে সার্বিকভাবে আমি বলবো বাংলাদেশের এই চলমান উন্নয়ন এবং দেশের মানুষের জীবন-যাত্রার মান উন্নয়ন ও অর্থনীতির দিক থেকে বাংলাদেশকে শক্তিশালী করা ও জঙ্গিমুক্ত রাখা- এ সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের ভূমিকাকে শেখ হাসিনা যে অবস্থানে নিয়ে গেছেন, আজকে তার জন্মদিনে আমরা সেটা স্মরণ করতে চাই এবং আমরা আশা করি আগামী দিনে তার নেতৃত্বে থাকলে বাংলাদেশ আরও তর তর করে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ এসডিজি অর্জন করতে সক্ষম হবে এবং বিশে^র বুকে আরও সক্ষম ও বড় রাষ্ট্র হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারবে।

আমরা যারা রাজনীতির বাইরে থেকে তার রাজনীতিকে প্রত্যক্ষ করেছি, তাতে আমরা দেখতে পেরেছি তিনি এমন একটি সময়ে আওয়ামী লীগের হাল ধরেছিলেন যখন আওয়ামী লীগকে আমরা একটি অবিন্যস্ত অবস্থায় দেখেছি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরে আওয়ামী লীগ যে ধাক্কা খেয়েছিলো এবং সেই ধাক্কা থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় চরিত্রের পরিবর্তন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধীরা যে রাষ্টক্ষমতায় অধিষ্টিত হয়েছিলো সেখান তিনি দলকে সংগঠিত করে এবং এই স্বাধীনতাবিরোধী চক্রান্তের যতোগুলো ষড়যন্ত্র আছে, সবগুলোকে তিনি রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করেছেন। সেই রাজনৈতিক মোকাবেলা করার জন্য তার দলকে তিনি যেভাবে গুছিয়েছেন এবং সংগঠিত করেছেন সেটি তার একটি বড় ধরনের শক্তি ছিলো এবং তিনি জনগণের মধ্যে তার জনপ্রিয়তাও তুঙ্গে নিতে সক্ষম হয়েছেন বলে জনগণ তার নেতৃত্বকে অতি সহজেই মেনে নিয়েছে এবং সেজন্যই তাকে ভালোবাসে। পরিচিতি : নিরাপত্তা বিশ্লেষক।