এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৪ পিএম
চিনে প্রথম মানুষের শরীরে ধরা পড়ল বার্ড ফ্লু, সবচেয়ে সংক্রামক স্ট্রেনে আক্রান্ত ৪ বছরের শিশু
অ্য়াভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস বা বার্ড ফ্লু-তে (Bird Flu) আক্রান্ত হল বছর চারেকের একটি শিশু। চিনে প্রথম মানুষের শরীরে ধরা পড়ল অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রামক স্ট্রেন এইচ৩এন৮ (H3N8)। তবে শিশুটির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলেই জানিয়েছে চিনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন।
বার্ড ফ্লু (Bird Flu) ভাইরাস পাখিদের থেকে মানুষের শরীরে ছড়াচ্ছে কিনা সে নিয়ে এতদিন বিজ্ঞানীমহলে নানা আলোচনা চলছিল। এবার হাতেনাতে তার প্রমাণ মিলল। চিনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন জানিয়েছে (এনএইচসি), ২০০২ সালে প্রথম অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের এই সংক্রামক স্ট্রেন চিহ্নিত করা গিয়েছিল উত্তর আমেরিকায়। চিনেও এখন এই প্রজাতির সংক্রমণ ছড়িয়েছে। তবে শিশুটির শরীর থেকে অন্য মানুষজনের শরীরে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করা হচ্ছে।
এনএইচসি-র বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাখির থেকে সরাসরি ভাইরাস শিশুটির শরীরে ঢুকেছে। এক্ষেত্রে ‘ডায়রেক্ট ট্রান্সমিশন’ হয়েছে। তবে শিশুটির সংস্পর্শে যারা এসেছে তাদের মধ্য়ে এখনও কোনও অস্বাভাবিকতা বা সংক্রমণের উপসর্গ ধরা পড়েনি।
বার্ড-ফ্লু (Bird Flu) ভাইরাস হল বিশেষ ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস যা শুধু পাখি নয়, মানুষ ও অন্যান্য পশুর শরীরেও সংক্রামিত হতে পারে। এই ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জাকে বলে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা। থুতু-লালা ড্রপলেটের মাধ্যমে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াতে পারে। অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার অনেক রকম প্রজাতি আছে, সবগুলোই যে ভীষণ সংক্রামক বা মানুষের শরীরে ছড়াতে পারে তেমন নয়। ভারতে যে ধরনের বার্ড ফ্লু ভাইরাস ছড়িয়েছিল তার নাম–এইচ৫এন১ এবং এইচ৭এন৯।
দেশের কয়েকটি রাজ্যে মৃত পাখিদের নমুনায় এইচ৫এন১ (H5N1)ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের স্ট্রেন খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। পাখিরা এই ভাইরাসের বাহক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ১৯৯৭ সালে প্রথম মানুষের শরীরে এই ভাইরাল স্ট্রেন চিহ্নিত করেছিল। মৃত পাখির দেহাবশেষের সংস্পর্শে এসেই মানুষের শরীরে সেই ভাইরাল স্ট্রেন ছড়িয়েছিল বলেই মনে করা হয়েছিল। চিনে যে সংক্রামক স্ট্রেন ছড়িয়েছে তা মানুষের জন্য কতটা বিপজ্জনক তা খতিয়ে দেখছেন গবেষকরা।
২০১৬-১৭ সালে এইচ৭এন৯ (H7N9)বার্ড ফ্লু ভাইরাস মানুষের শরীরেও ছড়িয়ে পড়েছিল। আক্রান্ত ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তারপর থেকে মানুষের শরীরে আর এই ভাইরাস ঢুকতে দেখা যায়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের শরীরে ঢুকলে করোনাভাইরাসের মতোই দ্রুত বিভাজিত হতে পারে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু ভাইরাসের স্ট্রেন। উপসর্গও করোনা সংক্রমণের মতোই।
তবে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস মানুষের শরীরে ছড়াতে পারে ঠিকই, তবে এক শরীর থেকে অন্য শরীরে এই ভাইরাল স্ট্রেন দ্রুত সংক্রমিত হতে পারে কিনা, সে ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য এখনও মেলেনি।খবর দ্য ওয়ালের /এনবিএস/২০২২/একে