ঢাকা, রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪ | ৮ পৌষ ১৪৩১
Logo
logo

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিস ট্রাসের ঘোষণা: আমি একজন 'কট্টর ইহুদিবাদী'


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ০৬ অক্টোবর, ২০২২, ০৯:১০ পিএম

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিস ট্রাসের ঘোষণা: আমি একজন 'কট্টর ইহুদিবাদী'

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিস ট্রাসের ঘোষণা: আমি একজন 'কট্টর ইহুদিবাদী'


লিজ ট্রাস যিনি প্রায় এক মাস আগে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন শুরু করেছিলেন সম্প্রতি এক বক্তৃতায় নিজেকে 'কট্টর ইহুদিবাদী' হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। একইসঙ্গে ইহুদিবাদী ইসরাইল এবং ব্রিটেনের মধ্যে আরো গভীর সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিস ট্রাস ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন স্বীকার করলেও পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে যুক্তরাজ্য এবং আমেরিকা বহু বছর ধরে সর্বক্ষেত্রে ইহুদিবাদী ইসরাইলের বর্ণবাদী নীতির প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে আসছে।

দশকের পর দশক ধরে ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠী ফিলিস্তিনিদের উপর কঠোর নিপীড়ন, নির্বিচারে হত্যা, অবৈধ বসতি নির্মাণ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকারকে উপেক্ষা এমনকি ফিলিস্তিনিদেরকে ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ডে তাদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর দমনপীড়নমুলক নীতির প্রয়োগ  বহু মানুষ ও বিশ্ব জনমতের ক্ষোভের কারণ হয়েছে।

বর্তমানে পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে যুক্তরাজ্য এবং আমেরিকার কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে যখন ইসরাইলের নীতিগুলোকে অনুসরণ করছে এবং নিজেদেরকে ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর সমর্থক হিসেবে জাহির করছে তখন  লিজ ট্রাসের স্বীকারুক্তি সবার সামনে এলো।  

ফিলিস্তিনি ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের অন্যতম নেতা সামি আবু জাহরা এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ইহুদিবাাদী ইসরাইলের প্রতি লিজ ট্রাসের এ স্বীকারুক্তিমূলক বক্তব্যর অর্থ হলো তেল আবিব সরকারের দমনপীড়নমুলক নীতির পক্ষে  এবং নির্যাতিত  ও নিপীড়িত  ফিলিস্তিনের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া। 

লন্ডনের মাধ্যমে ইসরায়েলের কাছে প্রয়োজনীয় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির বিষয়টি কট্রর ফিলিস্তিনি মানবাধিকার সংগঠনের দ্বারা সমালোচিত হয়েছে। সম্প্রতি ব্রিটেনের ম্যানচেস্টার শহরের বার্কলেস ব্যাংকের সামনে একদল ফিলিস্তিনি অধিকার কর্মী জড়ো হয়ে ইসরায়েলি অস্ত্র কোম্পানিগুলিকে এই ব্যাংকের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা বন্ধের দাবি জানায়।

ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর নীতি ও দাবি মেনে চলার কারণে ইসরায়েল ও ব্রিটেনের সম্পর্ক সবসময়ই ভালো পর্যায়ে রয়েছে। এখন ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী লিস ট্রাস তেল আবিব থেকে অধিকৃত জেরুজালেম আল কুদসে ব্রিটিশ দূতাবাস সরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং তিনি ঘোষণা করেছেন যে এই বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। এ পর্যন্ত ইসরায়েল, আমেরিকা, কসোভো, গুয়াতেমালা এবং হন্ডুরাস ইসরাইলের সমর্থনকারী চারটি দেশ তাদের দূতাবাস অধিকৃত জেরুজালেমে সরিয়ে নিয়েছে। তবে বেশিরভাগ দেশ তাদের দূতাবাস তেল আবিব থেকে অধিকৃত জেরুজালেম আল কুদসে স্থানান্তর করতে অস্বীকার জানিয়েছে। কারণ বিশ্বের অধিকাংশ দেশ জেরুজালেমের পূর্ব অংশের ওপর ইসরাইলি দখলদারিত্বের স্বীকৃতি দেয় না এবং এটিকে অবৈধ বলে মনে করে।

ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের মুখপাত্র আবদুল লতিফ আল-কানুও তেল আবিব থেকে জেরুজালেম আল কুদসে ব্রিটিশ দূতাবাস স্থানান্তরের বিষয়ে ট্রাসের সিদ্ধান্তকে ইহুদিবাদী দখলদার শাসকগোষ্ঠীর প্রতি প্রকাশ্য পক্ষপাত ও সমর্থন এবং ফিলিস্তিনি জাতির সাথে শত্রুতা হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন,  কুদস শহর ফিলিস্তিনের অধিকৃত ভূমি এবং এই শহরটি আমাদের জাতির অংশ এবং কুদসে দূতাবাস স্থানান্তর করে সত্য ইতিহাসকে কোনোভাবেই পরিবর্তন করা যাবে না।
।খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে