এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর, ২০২২, ০৭:১০ পিএম
ভ্যান গঘের পর ক্লদ মনের ছবিতে হামলা জার্মানির পরিবেশকর্মীদের, ছোঁড়া হল পচা আলু
প্রতিবাদ করার নামে বিশৃঙ্খলা স্বাভাবিক। কিন্তু নিশানা ঘুরে গেলে যে কোনও প্রতিবাদই মূল্যহীন হয়ে যায়। উপরন্তু সমর্থনের বদলে তা নিন্দার বিষয় হয়ে ওঠে। ঠিক যেমনটা ঘটল জার্মানির (Germany) মিউজিয়ামে। প্রতিবাদের নামে পরিবেশকর্মীদের নিশানায় অমূল্য সব চিত্রশিল্প। ভ্যান গঘ (Van Gogh), ক্লদ মনের মতো শিল্পীদের ছবির উপর এবার হামলা চলল। ভ্যান গঘের বিখ্যাত ‘সানফ্লাওয়ার’ ছবিতে টমেটো স্যুপ ছোঁড়ার পর এবার ক্লদ মনের ছবিতে ছোঁড়া হল পচা আলু। ভিডিও ভাইরাল (Viral Video)হতেই জোর সমালোচনা নানা মহলে। জার্মানির ওই পরিবেশ সংগঠনের এহেন কাজের প্রতিবাদে সরব সোশ্যাল মিডিয়া।
‘লেৎজে জেনারেশন’ (Letzte Generation) নামে জার্মানির এক পরিবেশ সংস্থা জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ে দীর্ঘদিন প্রতিবাদে শামিল। তাঁদের দাবি, জীবাশ্ম জ্বালানির (Fossilm Fuel) কারণেই পরিবেশ বেশি দূষিত হচ্ছে। তাই তা বন্ধ করতে হবে। কিন্তু এই দাবির সঙ্গে চিত্রশিল্পীদের ছবির উপর ক্ষোভ উগরে দেওয়ার কী সম্পর্ক? এই প্রশ্নের উত্তরেও নিজেদের কাজের পক্ষে সাফাই দিয়েছেন ‘লেৎজে’র কর্মীরা। বলছেন, কর্তৃপক্ষের নজর টানার জন্য এই কাজ করা হয়েছে। আর কতদিন তারা উদাসীন থাকবে? পালটা এই প্রশ্ন তুলেছেন হামলাকারীরা।
দিন কয়েক আগে লন্ডনের (London) এক মিউজিয়ামে ভ্যান গখের বিখ্যাত ছবি ‘সানফ্লাওয়ার’-এ টমেটো স্যুপ ছুঁড়েছিল দুই তরুণী। তাদেরও দাবি ছিল, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। আর এবার পচা আলু ছোঁড়া হল ক্লদ মনের বিখ্যাত (Claude Monet) ছবি ‘লে মিউলে’তে। ছবিটি তেলরঙে আঁকা অপূর্ব এক প্রাকৃতিক দৃশ্য। রঙের খেলাই মূলত আকর্ষণীয় এই ছবিতে। ফরাসি (France) শিল্পী ক্লদ অ্যাডল্ফ মনে মূলত ‘ইম্প্রেশনিস্ট আর্টিস্ট’ বলে পরিচিত। তেলরঙে আঁকা তাঁর অজস্র সুন্দর ছবি চিত্রপ্রেমী মানুষজনের মন কেড়েছে তো বটেই, ছবি আঁকার ছাত্রছাত্রীদের কাছে সেসব রীতিমতো পাঠ্য। আর পরিবেশ রক্ষার দাবিতে সেই মনোমুগ্ধকর প্রকৃতির ছবিকেই কার্যত অদৃশ্য করে তোলা হল। যদিও মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, ছবিটি কাঁচের ফ্রেমে ছিল। তাই মূল ছবির কোনও ক্ষতি হয়নি।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে হামলাকারীদের উন্মত্ত আচরণের পাশাপাশি তাঁদের কথাও শোনা গিয়েছে। বলা হচ্ছে, “মানুষ ভুখা, জমে যাচ্ছে, মরে যাচ্ছে। আমরা গুরুতর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি। এরপর টমেটো স্যুপ, আলুও জুটবে না। এর জন্যই আমরা ওসব ছুঁড়ে সচেতন করতে চাইছি। আমরা আসলে ভয় পাচ্ছি। কারণ, ২০৫০ সালের মধ্যে আমরা আর খেতে পারব না। এসব ভবিষ্যৎবাণী করছেন বিজ্ঞানীরা। ভয় তো হবেই।
সংবাদ প্রতিদিন/এনবিএস/২০২২/একে