ঢাকা, বুধবার, মার্চ ১৯, ২০২৫ | ৪ চৈত্র ১৪৩১
Logo
logo

বিমানে পরপর দু’বার হার্ট অ্যাটাক যুবকের! ৫ ঘণ্টার তুমুল লড়াই সহযাত্রী ডাক্তারের, তারপর…


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ০৬ জানুয়ারী, ২০২৩, ১০:০১ পিএম

বিমানে পরপর দু’বার হার্ট অ্যাটাক যুবকের! ৫ ঘণ্টার তুমুল লড়াই সহযাত্রী ডাক্তারের, তারপর…

বিমানে পরপর দু’বার হার্ট অ্যাটাক যুবকের! ৫ ঘণ্টার তুমুল লড়াই সহযাত্রী ডাক্তারের, তারপর…

 বিমান তখন মাঝআকাশে। আচমকা পরপর দু’বার হার্ট অ্যাটাকে মরণাপন্ন ৪৩ বছরের যুবক (Heart Attack in Flight)। ওই বিমানেই ছিলেন এক চিকিৎসক। তবে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ নন তিনি। তবু ৫ ঘণ্টা (5 Hours) লড়ে গেলেন যুবককে বাঁচানোর জন্য। ডাক্তারি সামগ্রী বলতে হাতে কেবল বিমানের এমার্জেন্সি কিট! তাই দিয়েই হল শেষরক্ষা। অবশেষে প্রাণে বাঁচলেন যুবক। সকলে ধন্য ধন্য করছেন ডক্টর বিশ্বরাজ ভামেলাকে। জান লড়িয়ে জীবন দিলেন তিনি, ঠিক যেমনটা করেন একজন আদর্শ ডাক্তার!
জানা গেছে, মাকে সঙ্গে নিয়ে ইংল্যান্ড থেকে বেঙ্গালুরু ফিরছিলেন ডক্টর বিশ্বরাজ ভামেলা। এয়ার ইন্ডিয়ার সেই বিমানেই ছিলেন ৪৩ বছরের এক যুবক, যিনি আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হন। সহযাত্রীকে দেখেই সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন বিশ্বরাজ। কিন্তু তাঁর সঙ্গে না আছে কোনও ওষুধ, না আছে কোনও যন্ত্র! বিমানের এমারজেন্সি কিট চেয়ে নেন তিনি। প্রথমেই অক্সিজেন দেন। তার পরে নিজে হাতে পাম্প করতে থাকেন ওই যুবকের বুকে। কৃত্রিম ভাবে শ্বাস চালাতে থাকেন রোগীর। সিপিআর দিতে থাকেন প্রাণপণ।
এদিকে অন্য সহযাত্রীরাও এগিয়ে এসেছেন, কেউ বাড়িয়ে দিচ্ছেন পালস অক্সিমিটার, কেউ রক্তচাপ মাপার যন্ত্র ইত্যাদি। সে সব কাজে লাগিয়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু রোগীর অবস্থা তখনও ভালর দিকে যায়নি। আশা প্রায় ছেড়েই দেন সকলে। এমন সময়ে পাকিস্তানের উপর দিয়ে যাওয়ার সময়ে জরুরি অবতরণের চেষ্টাও করে বিমানটি। কিন্তু অনুমতি মেলেনি। 
শেষমেশ ঘণ্টা পাঁচেক এভাবেই কৃত্রিম শ্বাস চালানোর লড়াইয়ের পরে মুম্বই পৌঁছয় বিমানটি, তখনই ওই যুবককে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করে এয়ার ইন্ডিয়া। ততক্ষণে একটু ধাতস্থ হয়েছেন ওই যুবক। নতুন জীবন ফিরে পাওয়ার বিহ্বলতা কাজ করছে তাঁর মধ্যে। এদিকে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন ডক্টর ভামেলাও। তিনি ভাবতেই পারেননি, শেষমেশ অসম্ভবকে সম্ভব করা যাবে!
জানা গেছে, বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটি হাসপাতালেক হেপাটোলজিস্ট ডক্টর বিশ্বরাজ ভামেলা। তাঁর পারদর্শিতা লিভার, প্যাংক্রিয়াস, গলব্লাডার– এসবের অসুখে। হার্টের অসুখ তাঁর ‘সিলেবাসে নেই’। কিন্তু ডাক্তারি পড়ার শুরুতে প্রাথমিক পাঠ ছিল এ বিষয়ে। সেটুকুই কাজে লাগান তিনি। ডাক্তারবাবু বলেন, ‘আমি যখন যুবককে বাঁচানোর চেষ্টা করছি আমার মা তখন হাউহাউ করে কাঁদছেন। মাও ভেবেছিলেন, বাঁচানো যাবে না ওই যুবককে। চল্লিশ হাজার ফুট উচ্চতায় এভাবে আমায় সিপিআর দিতে হবে, আমিও ভাবিনি! সাত বছর ধরে ডাক্তারি করছি, এই প্রথম এমন হল।’
মুম্বইয়ে ওই যুবককে নামিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করার পরে গোটা বিমান হাততালিতে ফেটে পড়ে। সকলে উঠে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান ডাক্তারবাবুকে। অনেকে এগিয়ে এসে সেলফি-ও তোলেন। এয়ারহোস্টেসরাও অভিনন্দন জানান, তোলেন ছবি।

খবর দ্য ওয়ালের/এনবিএস/২০২৩/একে