ঢাকা, বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০, ২০২৫ | ৫ চৈত্র ১৪৩১
Logo
logo

পড়াশোনা চালাতে বিড়ি বাঁধতেন, কেরলের সুরেন্দ্রনই এখন মার্কিন আদালতের বিচারক


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ০৯ জানুয়ারী, ২০২৩, ১০:০১ পিএম

পড়াশোনা চালাতে বিড়ি বাঁধতেন, কেরলের সুরেন্দ্রনই এখন মার্কিন আদালতের বিচারক

পড়াশোনা চালাতে বিড়ি বাঁধতেন, কেরলের সুরেন্দ্রনই এখন মার্কিন আদালতের বিচারক

 অভাবের তাড়নায় পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। পরিবারের পাশে দাঁড়াতে বিড়ি বেঁধেই উপার্জন করতে হত ১৬ বছর বয়সি কিশোরকে। এত সমস্যার মধ্যেও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। নিজের ইচ্ছাশক্তি আর জেদের জোরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেলা আদালতের বিচারপতির আসনে বসলেন সুরেন্দ্রন কে প্যাটেল। বেশ কিছুদিন থেকেই মার্কিন প্রশাসন-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত হচ্ছেন ভারতীয়রা। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন কেরলের সুরেন্দ্রন। সদ্যই টেক্সাসের (Texas District Court) জেলা আদালতের বিচারক হিসাবে শপথ নিয়েছেন তিনি।

বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা হলেও সুরেন্দ্রনের জন্ম কেরলের কাসারাগোড়ে। দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর স্কুল ছেড়ে দিতে বাধ্য হন তিনি। সুরেন্দ্রন (Surendran K Patel) বলেছেন, “পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার খরচ মেটানোর সাধ্য ছিল না আমার পরিবারের। বাধ্য হয়ে বিড়ি বাঁধতাম। এক বছর এই কাজ করার পরে আমার জীবন দর্শনই পালটে যায়।” এক বছর পরে আবার পড়াশোনা শুরু করেন সুরেন্দ্রন।

বন্ধুদের সাহায্যে কলেজে আইনের পাঠ নেন তিনি। সেই সময়ে হোটেলের কাজ করে খরচ চালাতেন, কলেজে যেতে পারতেন না। তাই পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়নি তাঁকে। কিন্তু অধ্যাপকদের সুরেন্দ্রন অনুরোধ করেন, পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হলে তিনি নিজেই কলেজ ছেড়ে দেবেন। শেষে দেখা যায়, ক্লাসে আসতে না পেরেও পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন সুরেন্দ্রন। কেরলের (Kerala) হোসদুর্গ আদালতেই আইনজীবী হিসাবে কেরিয়ার শুরু করেন তিনি। ২০০৭ সালে স্ত্রীর পেশার সূত্রে সপরিবারে টেক্সাস পাড়ি দেন। সেখানে গিয়ে আবারও নতুন করে আইনের ডিগ্রি অর্জন করতে হয় সুরেন্দ্রনকে। ২০১১ সাল থেকে আমেরিকায় কেরিয়ার শুরু করেন। পরে অবশ্য নিজের আইনি সংস্থা শুরু করেন।

কিছুদিন আগেই টেক্সাসের জেলা আদালতের বিচারক হিসাবে শপথ নিয়েছেন সুরেন্দ্রন। নজির গড়ে তাঁর মত, নিজের ভবিষ্যৎ নিজেকেই গড়তে হবে। টেক্সাস আদালতের বিচারক হয়ে বলেছেন, “আমার বাচনভঙ্গি নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন। দলের নেতারাও ভাবতে পারেননি আমি এই পদের যোগ্য। কিন্তু আজ এই জায়গায় এসে পৌঁছেছি। সকলের জন্য একটাই কথা বলার আছে। নিজের ভবিষ্যতের ভার অন্যদের হাতে ছেড়ে দিও না, নিজেই ভবিষ্যৎ গড়ো।” 
সংবাদ প্রতিদিন / এনবিএস/ ২০২৩/ একে