এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩, ০১:০২ পিএম
বিদ্যুতের অভাবে ভয়াবহ পানি সংকটে দক্ষিণ আফ্রিকা
গত কয়েক মাস ধরে চলা লোডশেডিংয়ের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা এবার ভয়াবহ পানি সংকটের মুখে পড়েছে। চরম বিদ্যুৎ সঙ্কটের কবলে পড়ে দেশটির দুগ্ধ খামারগুলোর দুধ ফ্রিজে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। এছাড়া ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা কাজ না থাকায় খামারের মুরগি মারা যাচ্ছে এবং মর্গে মৃতদেহ সংরক্ষণ মুশকিল হয়ে পড়েছে।
এই অবস্থার প্রতিবাদে রাজধানীর উত্তরে সোশাংগুভে শহরে রাস্তায় নেমেছেন বাসিন্দারা। বিক্ষোভকারীরা পাথর ও বর্জ্য দিয়ে রাস্তা অবরোধ করছেন। প্রাদেশিক পানি সরবরাহ প্রতিষ্ঠান র্যান্ড ওয়াটার চলতি সপ্তাহে জানায়, বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় পাম্প স্টেশনে পানি তোলা যাচ্ছে না। এতে জোহানেসবার্গ এবং প্রিটোরিয়ার কিছু অংশে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
থমাস মাবাসা নামের একজন রেলকর্মী জানান, তিনি কর্মস্থলেই নিজের গোসল সেরে নেন। কিন্তু বাড়িতে কখনো কখনো পানির আশায় মধ্যরাতে পর্যন্ত বসে থাকতে হয়, যাতে পানি চলে যাওয়ার আগেই বাচ্চারা গোসল সেরে নিতে পারে। এর পরও তার সন্তানরা বেশিভাগ সময়ই গোসল না করেই স্কুলে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
আফ্রিকার সবচেয়ে শিল্পোন্নত অর্থনীতির দেশটি গত বছরে রেকর্ড বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে পঙ্গু হয়ে গেছে। কারণ দেশটির বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান এসকম ঋণের ভারে জর্জরিত। অর্থ সঙ্কটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তেল ও কয়লা কিনতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি।
বিদ্যুতের অতিরিক্তি চাহিদা মেটাতে ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা দুটি নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু করে। এরই মধ্যে পুরোনো কেন্দ্রগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বাড়তে শুরু করে। নকশা ও নির্মাণ ত্রুটি, ব্যাপক ব্যয় বৃদ্ধি এবং দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় নতুন কেন্দ্রগুলো চালু করতে দেরি হচ্ছিল।
যদিও বিদ্যুতের উৎপাদন ঘাটতির জন্য এসকম সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের নাশকতা, কয়লা ও খুচরা যন্ত্রাংশ চুরিকে দায়ী করে। এ ঘটনার পর বিদ্যুৎকেন্দ্র পাহারা দেওয়ার জন্য সামরিক বাহিনী মোতায়েনকে করা হয়। শেষ পর্যন্ত এসকম পরিচালনার জন্য দুই হাজার ৩০০ কোটি ডলার ঋণ নিতে হয়, যা দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় আয়ের প্রায় এক চতুর্থাংশ।
২০২২ সালে এসকম জানায়, তাদের ডিজেল কেনার অর্থ ফুরিয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, সঙ্কট কাটাতে তাদের দেড় ট্রিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা জানিয়েছেন, সঙ্কট থেকে উত্তরণে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে পুরোপুরি উত্তরণে ছয় থেকে ১৮ মাস সময় লাগবে।
এনবিএস/ওডে/সি