এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩, ০৭:০২ পিএম
বিয়ের আগে সম্পর্ক করে পাপ করেছি: প্রভা
ক্যারিয়ারের শুরুতেই ব্যক্তিগত কারণে সমালোচনার মুখে পড়েন ছোটপর্দার অভিনয়শিল্পী সাদিয়া জাহান প্রভা। এরপর শোবিজে আর বেশি সুবিধা করতে পারেননি তিনি। ব্যক্তিগত জীবনে একাধিকবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেও বেশি দিন তা স্থায়ী হয়নি।
২০১০ সালের ১৬ এপ্রিল দীর্ঘদিনের প্রেমিক রাজিব হাসানের সঙ্গে বাগদান হয় প্রভার। ঠিক ওই বছরেরই ১৯ আগস্ট প্রভা বিয়ে করেন অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্বকে। তাদের বিয়ের পর রাজিবের সঙ্গে প্রভার ব্যক্তিগত মুহূর্তের কিছু ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। এমন ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর এক পর্যায়ে বিচ্ছেদ হয়ে যায় প্রভা-অপূর্বর। এতে পর্দার আড়ালে চলে যান প্রভা। রাজিবের সঙ্গে আসলে কী ঘটেছিল, তা নিয়ে এতদিন তেমন একটা কথা বলেননি অভিনেত্রী। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঐ বিষয়ে কিছু তথ্য দিয়েছেন তিনি।
নিজের ফেরিভায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রভা লিখেছেন, ‘আমি কোনো প্রতারণা করি নাই! আমি চুপ করে থাকি বলে এই না যে, আপনারা আমাকে নিয়ে যা খুশি তাই বানিয়ে বলবেন। আমার শুধু মনে হচ্ছিল আপনাদের কাছে প্রমাণ করে কি লাভ; উপরে যিনি আছেন, যার কাছে যাব, যিনি বিচারকারী তিনি জানলেই তো হয়।
‘বিয়ের আগেই সম্পর্ক করে যে গুনাহ আমি করেছি সেই গুনাহর জন্য আমি প্রতিনিয়ত মাফ চাচ্ছি মাফ চাইব! কিন্তু যতদিন বেঁচে থাকব আপনাদের কাছ থেকে অনেক সোয়াব কামাবো! কারণ আপনারা না জেনে আমাকে গালি দেন। না বুঝে আমাকে একতরফা প্রতারক বানিয়ে দিয়েছেন।’
ছোটপর্দার অভিনয়শিল্পী সাদিয়া জাহান প্রভা লেখেন, ‘শোনেন... প্রথমত আমি রাজিবকে সব জানিয়ে বিয়ের কথা শুরু হয়। কারণ বিয়ের নয় দশ মাস আমার সঙ্গে রাজিবের ব্রেকআপ থাকে, আমাদের সেই আট বছরের সম্পর্কের অলমোস্ট ৫-৬ বছরই ব্রেকআপ থাকতো। রাজিব আমাকে কখনই সম্পর্ক থেকে বের হতে দিত না। এটা ওর সাইকোলজিক্যাল সমস্যা ছিল। ব্রোকেন ফ্যামিলির ছেলে ও! কারণ ওর বাবা ওর মাকে ছেড়ে খুব ছোটবেলায় অন্য এক মহিলাকে বিয়ে করেছিল। তাই হয়ত ওর মনের মধ্যে ওই জেদ ছিল যে, ওকে ছেড়ে কেউ যেতে পারবে না! আর তাই এই আমাকে বিভিন্নভাবে কনভেন্স করে পার্সোনাল কিছু মুহূর্তের চিত্র ধারণ করে রাখে। যাই হোক সেটা যদি আপনারা সাইবার ক্রাইমের বিভিন্ন গল্প পড়ে থাকেন যে, কেমন করে ছেলেরা মেয়েদেরকে কনভেন্স করে, তাহলে আরও ক্লিয়ারলি জানতে পারবেন।’
তিনি লেখেন, ‘আমি রাজিবকে অনেকবার ছেড়ে যেতে চেয়েছি। আমাদের ব্রেকআপ হয়েছে, ব্রেকআপের পরে আমার অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়েছে, সেই বিয়ে আমি করিনি। রাজিব পড়াশোনা করত না। আমি তাকে চিনি যখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি। কিন্তু আমি যখন অনার্স থার্ড সেমিস্টার, তখন পর্যন্ত সে অনার্স ফার্স্ট সেমিস্টার। কেন জানেন, কারণ সে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতো! কিন্তু বারবার রেজাল্ট খারাপ করতো, ইউনিভার্সিটি তাকে বের করে দিত আবার অন্য ইউনিভার্সিটিতে টাকা দিয়ে ভর্তি হতো।
‘রাজিবের সঙ্গে আমার আরেকটা সমস্যা ছিল সেটা হলো যে, রাজিব কোনো কিছু ইনকাম করতে চাইত না! ওর কথা, আমার বাবার এত আছে আমার কেন ইনকাম করতে হবে। এই জিনিস নিয়ে আমাদের প্রচণ্ড দ্বন্দ্ব হতো। সবচেয়ে বেশি হতো পড়াশোনা নিয়ে। এই সমস্ত জিনিস নিয়ে আমাদের প্রচুর ব্রেকআপ হয়েছে!’
তিনি লিখেছেন, ‘যাইহোক ওই ছেলের সঙ্গে আমার বিয়ের কথা হয়েছিল, আংটি বদল হয়েছিল কিন্তু সে আংটি বদলের আট মাস আগে আমার কোনো যোগাযোগ ছিল না। ওই যে বললাম, আমাদের আট বছরের সম্পর্কের ব্রেকআপই থাকত অনেক। তো বিয়ের কথা শুরু হওয়ার সময় আমি রাজিবকে জানিয়ে দেই বিগত এতগুলো মাস আমার কার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, আমি সেই ছেলে, তার সঙ্গে আমার ভালোলাগা আছে; কিন্তু এটা হবার না, হবে না বুঝেই গেছি- এরকম কথাগুলো আমি তার সাথে ক্লিয়ার করে নিয়েছিলাম। আমার তখন বয়স ছিল ২২, মাথায় বুদ্ধি ছিল না। থাকলে তো সবার আগে রাজিবের সঙ্গে প্রেম করতাম না।’
প্রভা লিখেন, ‘বুদ্ধি যদিও আমার এখনো হয় নাই। যাইহোক আমার কাছে মনে হয়েছে, বিয়ে করার আগে তাকে সব কিছু জানিয়ে দেই, যে কার সাথে মাঝখানে সম্পর্ক হতে গিয়েও হয় নাই! (যার কথা বলছি ওনার সাথে আমার পরবর্তীতে বিয়ে হয়েছিল পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিলাম তাকে) এতে হিতে বিপরীত হয়েছে।
প্রভা তার প্রক্তন স্বামীকে নিয়ে লিখেছেন, ‘যেহেতু ধর্মীয়ভাবে অন্যায় করেছি, সোশ্যালি কোনো অন্যায় করিনি তাই ধর্মের নিয়মে বলছি, আমার এই ঘটনার পর আমার প্রাক্তন স্বামীর উচিত ছিল আমাকে আরও বেশি সাপোর্ট করা। মারাও যেতে পারতাম। শুধু আত্মহত্যা করলে কোনোভাবেই সৃষ্টিকর্তার কাছে যেতে পারবো না, সেই ভয়ে আর আল্লাহর সাথে দেখা করার লোভে আত্মহত্যা করি নাই। তার জীবন সুন্দর হয়েছে।’
এনবিএস/ওডে/সি