বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে মৌলিক বিষয়ে দ্রুত সংস্কার করে সরকার শিগগিরই নির্বাচনের পথে এগোবে— এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত জুলাই-আগস্ট বিপ্লব ও শহীদদের স্মরণে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। একই অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের ওপর সরকারের নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরা হয় এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে।
অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, ১২টি মৌলিক বিষয়ে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। বাকি বিষয়গুলোতেও প্রতিদিন বৈঠক চলছে। তারেক রহমান ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার মধ্যে লন্ডনের আলোচনাকে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার দিক হিসেবেই দেখছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে— এমন ধারণা তৈরি হয়েছে। যদি তা বাস্তবায়িত হয়, তাহলে দেশের বহু সংকট ও অনিশ্চয়তার সমাধানের পথ তৈরি হতে পারে বলে মত দেন তিনি।
জাতীয় প্রেসক্লাব পাঁচজন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও দুই শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা জানায়। একইসাথে মির্জা ফখরুল ও স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেনকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মির্জা ফখরুল আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, এক মা তার শহীদ ছেলের ছবি দেখিয়েছেন, আরেক শিশু যার মাথার খুলিটা গুলিতে উড়ে গিয়েছিল, প্লাস্টিক দিয়ে নতুন করে তৈরি করা হয়েছে— এটাই সবচেয়ে বড় ত্যাগ।
তিনি বলেন, এখন একে অপরকে বোঝার সময়। কারো সমালোচনায় না গিয়ে সবাই মিলে একটি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের দিকে অগ্রসর হওয়া দরকার। এর মাধ্যমেই জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হবে।
২০১৪ সালে প্রেসক্লাবের সামনে গাড়িতে হামলার স্মৃতি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, মনে হয়েছিল হয়তো জীবিত ফিরতে পারব না। সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা আজও তাড়া করে ফেরে। তিনি বলেন, আজ বেঁচে থেকে শহীদদের পরিবারের কান্না থামানোর দায়িত্ব আমাদের।
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাব সভাপতি হাসান হাফিজ এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া। শহীদদের পরিবারসহ সাংবাদিক নেতারাও বক্তব্য রাখেন।
