স্ত্রীসহ পুলিশ সদস্যকে মারধর: ৬ খেলোয়াড় ও কোচের জামিন

রাজশাহীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট মো. লিটন হোসেন মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমসে অংশ নিয়ে ফেরার সময় পুলিশ কনস্টেবল ও তার স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে কারাবন্দি বাকি ছয় খেলোয়াড় ও কোচের জামিন মঞ্জুর করেচেন।

জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- আলী আজম (১৯), আকাশ আলী মোহন (২০), রিমি খানম (১৯), পাপিয়া সারোয়ার ওরফে পূর্ণিমা (১৯), মোছা. দিপালী (১৯) ও সাবরিনা আক্তার (১৯) এবং তাদের কোচ আহসান কবীর (৪৫)।

এর আগে সোমবার ৫ খেলোয়াড় জামিন পান। অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় রাজশাহী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতের বিচারক মুহা. হাসানুজ্জামান তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।

গত ৫ মার্চ দুপুরে রাজশাহী রেল স্টেশনে পুলিশ কনস্টেবল ও তার স্ত্রীকে মারধরের ঘটনা ঘটে। আহত পুলিশ কনস্টেবল গোলাম কিবরিয়াকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা জয়া রাজশাহী রেলওয়ে থানায় মোট ১৩ জনের নামে মামলা করেন।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- রাজশাহী মহানগরীর পাঁচানি মাঠ এলাকার আলী আজম (১৯), হাজরাপুকুর ডাবতলা এলাকার আকাশ আলী মোহন (২০), একই এলাকার আব্দুল আল জাহিদ (১৬), জিন্নানগর এলাকায় আহসান কবীর (৪৫), নিউ কলোনি এলাকার ফারহানা খন্দকার (১৭), কয়েরদাঁড়া এলাকার রিমি খানম (১৭), জেলার মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট এলাকার খাদিজা খাতুন (১৮), রাজশাহী মহানগরীর বখতিয়ারবাদ মালদা কলোনি এলাকার পাপিয়া সারোয়ার পূর্ণিমা (১৯), ছোটবনগ্রাম উত্তরপাড়ার দিপালী (১৯), বড় বনগ্রাম রায়পাড়া এলাকার সাবরিনা আক্তার (১৯), একই এলাকার জেমি আক্তার (১৪), মহানগরীর শাহ মখদুম থানার মোড় এলাকার বৃষ্টি মণি (১৬) এবং হাজরাপুকুর ডাবতলা এলাকার রমজান (১৯)। এদের মধ্যে রমজান ছাড়া বাকি সবাই গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকি ১২ জনকে রাতে আদালতে নেওয়া হয়।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, সকাল ছয়টার ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে রাজিয়া সুলতানা জয়া তার স্বামী পুলিশ কনস্টেবল গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা দেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় ট্রেনটি রাজশাহী স্টেশনে পৌঁছায়। এ সময় রাজিয়া সুলতানা এবং তার স্বামী ট্রেন থেকে নামার জন্য দরজার কাছে আসেন।

কিন্তু খেলোয়াড়রা জটলা পাকিয়ে দরজা ঘিরে রেখেছিলেন। রাজিয়া এবং তার স্বামী সেখান থেকে তাদের সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা এ দম্পতির সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এর জের ধরে খেলোয়াড়রা পুলিশ কনস্টেবল এবং তার স্ত্রী রাজিয়াকে বেদম মারধর করেন। তাদের মারধরে পুলিশ কনস্টেবলের মুখ, পিঠ এবং অণ্ডকোষে আঘাতপ্রাপ্ত হন বলে অভিযোগ।

এ সময় পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রী রাজিয়াকেও মারধর করা হয়। তবে পুলিশ কনস্টেবল গোলাম কিবরিয়া বেশি আহত হয়েছেন। তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে খেলোয়াড়দের পরিবার বলছে ভিন্ন কথা। তারে দাবি, ট্রেনে তারা তাদের লাগেজ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তা খুঁজতে গিয়েই জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ কাজ করা কনস্টেবল গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে মীমাংসার কথা বলে তাদের রেলওয়ে থানায় নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে পাকশী রেলওয়ে জেলার রাজশাহী থানার ওসি গোপাল কুমার জানান, এ ঘটনায় ১৩ জন এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি একজনকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আসামিরা জাতীয় যুব গেমসে অংশ নিয়ে রাজশাহী ফিরছিলেন। কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটল তা তদন্ত করে দেখা হবে।

এনবিএস/ওডে/সি

news