চলতি বছরের এশিয়া কাপ আয়োজন নিয়ে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সম্প্রচার নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা ও ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে পুরো টুর্নামেন্ট নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল জানিয়েছিল, ৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে এশিয়া কাপ। তবে সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠান সোনি স্পোর্টস নেটওয়ার্কের আর্থিক দাবির কারণে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) চাপে পড়েছে।
সোনি স্পোর্টস নেটওয়ার্ক ২০৩১ সাল পর্যন্ত এশিয়া কাপ সম্প্রচারের জন্য ১৪৮০ কোটি টাকা দিতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানে সম্প্রচারের জন্য তারা আলাদাভাবে ৩৭০ কোটি টাকা দাবি করেছে, যা মোট চুক্তির ২৫ শতাংশ।
আগে এই হার ছিল মাত্র ১০ শতাংশ। হঠাৎ করে ১৫ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় পিসিবির জন্য এই টাকা মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে। পাকিস্তানি গণমাধ্যম বলছে, এ অবস্থায় দেশের সব সম্প্রচারকারীকে এক হয়ে একক প্ল্যাটফর্মে ম্যাচ দেখাতে হবে, না হলে পাকিস্তানে হয়তো এশিয়া কাপ সম্প্রচারই বন্ধ হয়ে যাবে।
পিসিবির এক কর্মকর্তা জানান, এই আর্থিক চাপ এবং সম্প্রচারকারীদের কৌশল ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেট সম্পর্ক আরও অবনতির দিকে ঠেলে দিতে পারে। তার মতে, ভারতের সম্প্রচারকারী সংস্থা একধরনের চাপ প্রয়োগ করছে, যার প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
এদিকে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়েও দুঃচিন্তা বাড়ছে। পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা এবং ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক আগেই উত্তপ্ত। এরই মাঝে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড আইসিসিকে জানিয়েছিল, বড় টুর্নামেন্টে যেন ভারত-পাকিস্তানকে একই গ্রুপে না রাখা হয়।
তারপরও এশিয়া কাপে দুই দলকে এক গ্রুপে রাখা হয়েছে এবং সূচি অনুযায়ী ১৪ সেপ্টেম্বর ম্যাচ হওয়ার কথা। তবে ভারতের অংশগ্রহণ এখনও নিশ্চিত নয়।
সম্প্রতি ‘ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লেজেন্ডস’-এও ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বাতিল হয় এবং সেমিফাইনালে মুখোমুখি হলেও ভারত প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ায়। ভারতীয় সম্প্রচারকারী সংস্থা সেই সিদ্ধান্তে পাশে দাঁড়ায়।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে কি না, তা অনেকাংশে নির্ভর করছে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর। পাকিস্তান ম্যাচ বয়কটের দাবিতে সরকারের ওপর রাজনৈতিক চাপও বাড়ছে।
সব মিলিয়ে আবারও অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে এশিয়া কাপের ভবিষ্যৎ।
