২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন করে এক অধ্যায় যোগ হয়। এই সময়ের মধ্যে ছাত্র জনতার বৃহৎ আন্দোলন দেশের রাজনীতিতে এক নতুন মোড় নিয়ে আসে। গণঅভ্যুত্থান হিসেবে পরিচিত এই আন্দোলন ছিল একটি বিপ্লবী প্রতিবাদ, যেখানে দেশের ছাত্রসমাজ শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এসে আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলন শেষে স্বৈরাচারী সরকার পতন ঘটিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে, সম্প্রতি ফেসবুক পোস্টে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন আওয়ামী দালাল মাসুদা ভাট্টী। তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডির বিভিন্ন পোস্টে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতাদের সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।  

২০২৪ সালের এই গণঅভ্যুত্থান ছিল একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন, যেখানে ছাত্ররা রাস্তায় নেমে এসে দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছিল। আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ছিল বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং গণতন্ত্রের অভাব। ছাত্র-জনতা বিভিন্ন রাজনীতিক দলের সমর্থনে এবং সামাজিক নানা সমস্যার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করে। এই আন্দোলনের মূলে ছিল সরকারের দুর্নীতি, বিদ্যুৎ সংকট, এবং সাধারণ মানুষের প্রতি অযত্নের প্রতিবাদ। 

১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর, ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলন ছিল একটি ধারাবাহিক সংগ্রাম। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্ররা সংগঠিত হয়ে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানায়। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাঁরা দেশের মানুষকে একটি শক্তিশালী বার্তা দেয়, যে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এবং গণতন্ত্রের পক্ষ। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, "মাসুদা ভাট্টীর মন্তব্য রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ভুল। ছাত্র-জনতার আন্দোলন কখনোই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নয়, বরং এটি দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন।" তাদের দাবি, মাসুদা ভাট্টী যদি রাজনৈতিক দর্শন থেকে বিষয়টি না বুঝে থাকেন, তবে তাকে আরও সচেতন হওয়া উচিত। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মাসুদা ভাট্টীর এই মন্তব্য রাজনৈতিকভাবে একেবারে ভুল ছিল। তাদের মতে, গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের ইতিহাসের একটি গর্বিত অধ্যায়। ছাত্ররা দেশের উন্নয়ন, গণতন্ত্র, এবং মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেছে। সেই আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা বাংলাদেশের রাজনীতির প্রতি অবমাননা বলে মন্তব্য করেছেন তারা। 

এছাড়া, মাসুদা ভাট্টীর বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তাঁর বক্তব্যে মানুষ তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়েছে।

news