প্রথমবারের মতো বাজারের সুদ হারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পাঁচটি সঞ্চয় স্কিমের মুনাফার হার বাড়িয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)। গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাষ্ট্রপতির আদেশে জারি করা প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, নতুন মুনাফার হার ১২.২৫ শতাংশ থেকে ১২.৫৫ শতাংশ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। এই হার চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
নতুন মুনাফার হার কার্যকর হয়েছে পরিবার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র এবং পোস্ট অফিস ফিক্সড ডিপোজিট স্কিমে। বিনিয়োগকারীদের জন্য দুটি ধাপ নির্ধারণ করা হয়েছে—৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার নিচে এবং তার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য আলাদা মুনাফার হার।
পরিবার সঞ্চয়পত্র: ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার নিচে বিনিয়োগকারীরা পাবেন ১২.৫০ শতাংশ মুনাফা। এই সীমার উপরে বিনিয়োগকারীরা পাবেন ১২.৩৭ শতাংশ।
পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র: সীমার নিচে বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২.৪০ শতাংশ, আর সীমার উপরের জন্য ১২.৩৭ শতাংশ।
তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র: ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার নিচে বিনিয়োগকারীরা পাবেন ১২.৩০ শতাংশ এবং উপরে বিনিয়োগকারীরা ১২.২৫ শতাংশ।
পেনশনার সঞ্চয়পত্র: এই স্কিমে সীমার নিচে মুনাফা ১২.৫৫ শতাংশ এবং উপরে ১২.৩৭ শতাংশ।
পোস্ট অফিস ফিক্সড ডিপোজিট: ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার নিচে মুনাফা হবে ১২.৩০ শতাংশ এবং উপরের জন্য ১২.২৫ শতাংশ।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত মুনাফার এই হার কার্যকর থাকবে। ছয় মাস পর নতুন করে মুনাফার হার নির্ধারণ করা হবে। তবে নির্ধারিত সময়ে সঞ্চয়পত্র কেনা বিনিয়োগকারীরা সেই সময়ের মুনাফার হারেই মেয়াদ পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত মুনাফা পাবেন।
আগের তুলনায় বর্তমান মুনাফার হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে আগের ১০.১১ শতাংশ থেকে বর্তমানে ১২.৪০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে আগের ১১ শতাংশ থেকে এখন ১২.৩০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে।
জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় থাকা ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড এবং ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক সাধারণ হিসাবের মুনাফার হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
এই মুনাফা বৃদ্ধির ফলে বিশেষ করে প্রান্তিক বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন। পরিবার, অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ, পেনশনার এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা এই সঞ্চয় স্কিমে বিনিয়োগের মাধ্যমে আর্থিক সুরক্ষা পেতে আরও আগ্রহী হবেন বলে আশা করা যায়।
সরকারের এই পদক্ষেপ দেশের সঞ্চয় খাতকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের জন্য আর্থিক সুরক্ষা বেষ্টনী আরও জোরদার করবে।


