সম্প্রতি বাংলাদেশে শতাধিক পণ্যের উপর ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। ব্যবসায়ীরা এবং দেশের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত তাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে। তারা মনে করছেন, ভ্যাট বাড়ানোর ফলে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমবে এবং ব্যবসায়ীরা আরও বেশি চাপে পড়বে।
ঢাকা চেম্বারের নতুন সভাপতি তাসকিন আহমেদ শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "এই সিদ্ধান্তের ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে এবং দেশের জনগণের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।" তিনি আরও বলেন, "এটি শুধু ভ্যাট বৃদ্ধি নয়, সুদের হার বাড়ানো, মুদ্রাবাজারের অস্থিরতা, এবং করের হার বাড়ানোর কারণে দেশের অর্থনীতির অবস্থা আরও খারাপ হবে।"
এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বলছেন, "রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া ব্যবসার পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব নয়। বিনিয়োগকারীরা এখন নির্বাচিত সরকারের অপেক্ষায় রয়েছেন।" তিনি মনে করেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত না হলে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখা কঠিন হবে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) এর সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী বলেছেন, "ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানো এবং গ্যাসের দাম বাড়ানোর কারণে উৎপাদন খাতের টিকে থাকা কঠিন হবে। এ ধরনের সিদ্ধান্তগুলো পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করবে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির পথে অন্তরায় হবে।"
এর পাশাপাশি, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনও সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং দাবি করেছে যে, এই সিদ্ধান্তের ফলে শিল্প খাত আরও বিপদে পড়বে এবং ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বলছে, যে পণ্যগুলোতে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে, তাদের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নেই, তাই মূল্যস্ফীতিতে এর প্রভাব পড়বে না। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, ভ্যাট বাড়ানোর ফলে তাদের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে এবং এর প্রভাব পণ্যমূল্যেও পড়বে।
এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতিবিদরা এবং ব্যবসায়ীরা সরকারের নীতির পুনর্বিবেচনার দাবি জানাচ্ছেন। তারা মনে করছেন, দেশীয় শিল্প ও ব্যবসার উন্নতির জন্য আরও ব্যবসাবান্ধব নীতি প্রয়োজন, যা দেশের আর্থিক অবস্থাকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।


