সরকারের শুল্ক ও ভ্যাট বাড়ানোর ফলে খাদ্য পণ্যের দাম আবারও বেড়ে যাবে। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী আজ সাংবাদিকদের জানিয়ে দিয়েছেন, ভ্যাট বাড়ানোর ফলে ৫ টাকার বিস্কুটের দাম ৭ টাকা, ১০ টাকার বিস্কুটের দাম ১৩ টাকা, ২০ টাকার জুসের দাম ২৫ টাকা এবং ২৫ টাকার জুসের দাম ৩৩ টাকা হয়ে যাবে। যদিও এখন পর্যন্ত তারা এসব পণ্যের দাম বাড়াননি, তবে খাদ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক-কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা এসব পণ্যের দাম বাড়াইনি, তবে শুল্ক ও ভ্যাট বাড়ানোর ফলে ভোক্তা ও কৃষকদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’ তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা ভয় পাচ্ছেন, বিশেষত কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প ও বিস্কুট প্রস্তুতকারকদের জন্য এ বৃদ্ধি অত্যন্ত চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিন, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের সঙ্গে বৈঠক শেষে আহসান খান চৌধুরী আরও বলেন, ‘ভ্যাট বাড়ানো হলেও, এনবিআর চেয়ারম্যান ভ্যাট কমানোর বিষয়টি ইতিবাচকভাবে পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।’
৯ জানুয়ারি, দেশের ১০০টিরও বেশি পণ্যের ওপর মূসক বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়। বিস্কুট, কেক, আচার, চাটনি, টমেটো কেচাপ, ফ্রুট ড্রিংকসসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ফলের রস ও ফ্রুট ড্রিংকসের ওপর সম্পূরক শুল্কও ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত ব্যবসায়ীরা বলেন, এই বাড়তি করের ফলে উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়বে এবং গ্রাহকদের কাছে সেই দাম পৌঁছানোর কারণে নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য এসব পণ্য কেনা কঠিন হয়ে পড়বে। একাধিক ব্যবসায়ী শঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, "ভ্যাট বাড়ানো হলে বাজারে কিভাবে ৫ টাকা ও ১০ টাকার পণ্য বিক্রি হবে?"
এদিকে, বাপা’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাড়তি শুল্ক-কর প্রত্যাহার না করা হলে তারা কঠোর কর্মসূচি নিতে পারে।
এছাড়া, ব্যবসায়ীরা মনে করেন যে, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ঋণের সুদহার এবং আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিরতার কারণে এই কর বৃদ্ধি বাস্তবসম্মত নয়। যদি শুল্ক বাড়ানো হয়, তবে এটি শুধু ব্যবসায়ীদেরই ক্ষতি করবে না, বরং দেশের শ্রমজীবী, প্রান্তিক কৃষক এবং নিম্ন আয়ের মানুষও সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান আশ্বাস দিয়েছেন যে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে সুষ্ঠু সমাধান আসবে। তবে, তাতে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ কাটবে কিনা, তা সময়ই বলবে।


