বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর মাতারবাড়ী পরিচালনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদি মালিকানাধীন রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল। তারা মাতারবাড়ীকে এই অঞ্চলের বৃহত্তম বন্দরগুলোর একটি হিসেবে রূপান্তরিত করতে সহায়তা করতে প্রস্তুত। আজ সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভার সাইডলাইনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতকালে এ আগ্রহের কথা জানিয়েছেন রেড সি গেটওয়ের নির্বাহী চেয়ারম্যান আমের এ. আলিরেজা।


রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালের নির্বাহী চেয়ারম্যান আমের এ. আলিরেজা বলেছেন, তারা মাতারবাড়ী বন্দরকে এই অঞ্চলের অন্যতম প্রধান গভীর সমুদ্রবন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। তিনি বলেন, মাতারবাড়ী বন্দর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বাণিজ্যিক গুরুত্ব বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। 

এর আগে, গত বছর রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং ২০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে। রেড সি গেটওয়ে তাদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আধুনিক সরঞ্জাম আমদানির জন্য চীনে ২৫ মিলিয়ন ডলারের কনটেইনার হ্যান্ডলিং ক্রেন অর্ডার করেছে। এসব সরঞ্জাম বিদ্যুৎ এবং জ্বালানির মাধ্যমে পরিচালিত হবে, যা পরিবেশবান্ধব এবং নির্গমন কমাবে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রেড সি গেটওয়ে কোম্পানিকে আরও বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং দেশের রপ্তানি হাব হিসেবে চট্টগ্রাম অঞ্চলকে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, মাতারবাড়ী বন্দরের উন্নতি দেশের শিপিং এবং বাণিজ্যিক ক্ষেত্রকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। 

এসময় প্রধান উপদেষ্টা সরকার এবং রেড সি গেটওয়ের মধ্যে ভবিষ্যতে আরও সহযোগিতা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।  

সাক্ষাতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক আরিফুল ইসলাম। 

রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল, যা সৌদি আরবের বৃহত্তম বন্দর জেদ্দার টার্মিনাল পরিষেবা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান, আগামী ২২ বছর পর্যন্ত পতেঙ্গা টার্মিনালের পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) তাদের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করবে।

এটি বাংলাদেশের বন্দর খাতের জন্য একটি নতুন এবং উত্তেজনাপূর্ণ অধ্যায়। মাতারবাড়ী বন্দর পরিচালনায় সৌদি কোম্পানির আগ্রহ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে সক্ষম হতে পারে।  

news