বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানাভিত্তিক আর্জেন্ট এলএনজির সঙ্গে একটি বড় এলএনজি সরবরাহ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তি অনুসারে, বাংলাদেশ প্রতি বছর ৫০ লাখ টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কিনবে। চুক্তিটি এক নন-বাইন্ডিং চুক্তি হিসেবে স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং এটি ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে প্রথম বড় এলএনজি সরবরাহ চুক্তি।
বাংলাদেশ সরকারের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা ভিত্তিক আর্জেন্ট এলএনজির একটি বৃহৎ এলএনজি চুক্তি সই হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ প্রতি বছর ৫ মিলিয়ন টন এলএনজি সরবরাহ পাবে। আর্জেন্ট এলএনজি বর্তমানে লুইজিয়ানায় বার্ষিক ২৫ মিলিয়ন টন এলএনজি উৎপাদন করার সক্ষমতার জন্য অবকাঠামো নির্মাণ করছে।
এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের জ্বালানি বান্ধব নীতির প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেছেন শিল্প বিশেষজ্ঞরা। ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর, যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি বিভাগের লাইসেন্স স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেছে, যা সুপার-কোল্ড গ্যাস রপ্তানির অনুমতি দেয়।
এলএনজি খাতে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে এই চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথোরিটির (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, “এটি বাংলাদেশের শিল্প খাতে শক্তিশালী জ্বালানি সরবরাহের অংশ হয়ে উঠবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।”
বাংলাদেশ এলএনজির ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি সমাধানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে দেশের মূল্য সংবেদনশীলতার কারণে, ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে সস্তা কয়লার ওপর নির্ভর করতে হয়েছিল।
এলএনজি খাতে বাংলাদেশের আরো উন্নতি ঘটে যখন ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে কাতার এনার্জি ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক্সিলারেট এনার্জির সাথে ১৫ বছরের জন্য এলএনজি সরবরাহ চুক্তি সই করা হয়। কাতার তাদের নর্থ ফিল্ড এক্সপ্যানশন প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২৭ সালের মধ্যে এলএনজি উৎপাদন ১২৬ মিলিয়ন টনে বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
এলএনজি চুক্তি বাংলাদেশের শক্তির খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে, যা দেশের শিল্প ও জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখবে।
এটি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে নতুন এক যুগের সূচনা। এই চুক্তি কেবল বাংলাদেশের অর্থনীতিতে জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত করবে না, বরং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সম্পর্কের ক্ষেত্রেও এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।


