প্রথমবার পুরস্কার দিল চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি

দেশের চলচ্চিত্রের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত সংগঠনগুলোর মধ্যে একমাত্র সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির প্রথমবারের মতো দেশের চলচ্চিত্র ও সংশ্লিষ্টদের পুরস্কার প্রদানের বিষয়টি প্রশংসনীয়। শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেমে ‘স্বপ্নধরা বিএফডিএ অ্যাওয়ার্ড ২০২২-২৩’ শীর্ষক এই আয়োজনে প্রতি বছরের জন্য ১৫টি করে শাখায় পুরস্কার দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যপ্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াতের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন একই মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব শাহীন সুমন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস)-এর সভাপতি রাজু আলীম ও সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ সহ শোবিজের অনেক তারকাই এসময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিষ্ঠার পর পরিচালক সমিতির প্রথমবারের এই আয়োজনে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়েছে পরিচালক এ জে মিন্টু, কাজী হায়াৎ, পরিচালক-চিত্রনায়ক সোহেল রানা এবং এম এ আলমগীরকে। এরা সবাই এই সম্মাননার জন্য যথেষ্ট যোগ্য, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে নির্মাতা কাজী হায়াত বর্তমানে পরিচালক সমিতির সভাপতি। তার আজীবন সম্মাননা পাওয়ার বিষয়টি দৃষ্টিকটু লেগেছে। 

পুরস্কার নির্ধারণের জন্য জুরি বোর্ডও গঠন করা হয়েছে পরিচালকদের মধ্য থেকেই। বলতে গেলে নিজেরাই নিজেদেরকে নির্বাচিত করে পুরষ্কৃত করেছেন। তারা চাইলে জুরি বোর্ড সমিতির বাইরে রাখতে পারতেন। যেখানে সদস্য হিসেবে রাখা যেতো সিনেমা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিশিষ্টজনদের। আবার দর্শক ভোটিংয়েও  সেটা করা যেতো। এমনটা হলে বিএফডিএ অ্যাওয়ার্ডের মান আরও অনেক বৃদ্ধি পেত বলে মনে করছেন অনেকে।

২০২২ ও ২০২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলো ও কলাকুশলিদের মধ্য থেকে সেরাদের নির্বাচন করেছে পরিচালক সমিতির জুরি বোর্ডের সদস্যরা। এ আয়োজনে ২০২২ সালের সেরা চলচ্চিত্র ‘পরাণ’, সেরা পরিচালক রায়হান রাফী (পরাণ), সেরা অভিনেতা শরিফুল রাজ (পরাণ), সেরা অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম (পরাণ), সেরা চিত্রনাট্যকার মাহমুদ দিদার (বিউটি সার্কাস), সেরা সংগীতশিল্পী অয়ন চাকলাদার ও দিলশাদ নাহার কনা, সেরা সংগীত পরিচালক ইমন সাহা, সেরা গীতিকার জনি হক বিএফডিএ পুরষ্কার পান। এছাড়া, ২০২৩ সালের সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে ‘প্রিয়তমা’, সেরা পরিচালক হিমেল আশরাফ, সেরা অভিনেতা: শাকিব খান (প্রিয়তমা), সেরা অভিনেত্রী: শবনম বুবলী (প্রহেলিকা), সেরা চিত্রনাট্যকার: হৃদি হক (১৯৭১ সেই সব দিন), সেরা সংগীতশিল্পী বালাম ও কোনাল, সেরা সংগীত পরিচালক প্রিন্স মাহমুদ এবং সেরা গীতিকার হিসেবে পুরষ্কার পান সোমেশ্বর অলি।

পরিচালক সমিতির প্রধান শর্ত হচ্ছে সেন্সর অনুমোদনপ্রাপ্ত সিনেমার নির্মাতা হতে হবে। কিন্তু স্বপ্নধরা বিএফডিএ অ্যাওয়ার্ডে আয়োজনে ওটিটি নির্ভর ওয়েবফিল্ম অর্থ্যাৎ সেন্সরবিহীন সিনেমা বিভাগে পুরষ্কার প্রদানও আলাদাভাবে প্রশংসা করার মতো। আবার এ আয়োজনে পুরষ্কার ও মনোনয়নপ্রাপ্ত সিনেমা ও নির্মাতাদের মধ্যে বেশিরভাগই ওটিটি ও ভিন্ন ধারার প্লাটফর্মগুলোয় নিয়মিত। তাদের বিভিন্ন কন্টেন্টই প্রায়শ আলোচনার কেন্দ্রে থাকে সামাজিকমাধ্যম ও গণমাধ্যমে। এতে প্রতিয়মান যে, মূলধারার নির্মাতাদের ছবির তুলনায় অনেক বেশি গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে ওটিটি বা আনসেন্সরড ছবির নির্মাতাদের।

তাই হয়তো পরিচালক সমিতি তাদের অ্যাওয়ার্ড আয়োজনে ওয়েব ফিল্ম ক্যাটাগরিতেও পুরষ্কার প্রদান করেছে। ওয়েব ফিল্ম বিভাগে ২০২২ সালের সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে ‘টান’, সেরা পরিচালক রায়হান রাফী (টান), সেরা অভিনেতা সিয়াম আহমেদ (টান), সেরা অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী (রেডরাম) এবং ২০২৩ সালের সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে ‘বাবা সামওয়ান ইজ ফলোয়িং মি’, সেরা পরিচালক শিহাব শাহীন (বাবা সামওয়ান ইজ ফলোয়িং মি), সেরা অভিনেতা জোভান (পরী), সেরা অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ (বাবা সামওয়ান ইজ ফলোয়িং মি) পুরষ্কার পেয়েছেন। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news