দীর্ঘদিন ধরেই নিরাপদ সড়কের দাবিতে সোচ্চার জনপ্রিয় অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন। এই দাবিতে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ নামের সংগঠনেরও তিনি প্রতিষ্ঠাতা। বিগত সরকারের সময়ে সড়কের বিভিন্ন সমস্যা ও পরিবহন মালিকদের অরাজকতা নিয়ে কথা নানা ঝামেলাও পড়তে হয়েছে তাঁকে। বিশেষ করে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের সঙ্গে একাধিকবার বিবাদে জড়িয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি এই চিত্রনায়ক দাবি করেছেন যে, তাঁকে নিয়ে অপপ্রচার চলছে। বলা হচ্ছে, ইলিয়াস কাঞ্চন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সভায় এসব বিষয়ে কথা বলেছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। যেখানে নায়ক স্পষ্টভাবে দাবি করেছেন যে, তিনি কখনোই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তবে সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এবার যেভাবে তারা আমাকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আমি আওয়ামী লীগের কেউ হয়ে থাকলে আমাকে গ্রেপ্তার করুন। আপনাদের ক্ষমতা দেখান। তবুও অপপ্রচার চালাবেন না। আমি দেশবাসীর কাছে এই অপপ্রচারের বিচার চাই।’
‘বেদের মেয়ে জোছনা’খ্যাত এই নায়ক বলেন, ‘একদল মানুষ বলছে আমি নাকি আওয়ামী লীগের লোক। এটা সমন্বয়কদের কাছে তারা বলেছে। এমনটাও বলেছে, আমি নাকি আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম। তারা বলে আমি আওয়ামী লীগের লোক, এই দলের লোক, ওমুক পার্টির লোক। দেশবাসী জানে আমি কোনো দিন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হইনি।’
বিগত সরকারের সময়ে ঝামেলায় পড়ার কথা জানিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন করতে গিয়ে আমাকে শাজাহান খান গংদের মতো মাফিয়াচক্রের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমার ছবি টাঙিয়ে তারা জুতা নিক্ষেপ করেছেন। আমার ছবিতে ঝাড়ু দিয়ে পিটিয়েছেন।’
ইলিয়াস কাঞ্চনের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে নেওয়া তাঁর আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আজ (গতকাল) সরকারিভাবে ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস’ পালিত হচ্ছে। কিন্তু একটি মহল বিষয়টি অস্বীকার করছে।
এই নায়ক বলেন, ‘২০১৮ সালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে যে আন্দোলন, তারও আগে থেকে ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, তাদের দাবির ভিত্তিতেই নাকি জন-আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। এর আগে নাকি নিরাপদ সড়কের জন্য মানুষের কোনো আকাঙ্ক্ষা ছিল না।’
এ সভায় বর্তমান সরকার ও রাজনৈতিক সমস্যা নিয়েও কথা বলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘সরকারকে নিয়ে যেসব কথাবার্তা শুরু হয়েছে, সেটা ভয়াবহ। আমরা যারা অনেক রিস্ক নিয়ে, অনেক ত্যাগ করে এই আন্দোলনে শরিক হয়েছিলাম, এই সরকার যদি ব্যর্থ হয়, এই আন্দোলন যদি ব্যর্থ হয়, তারা যদি আবার ফেরত আসে, তাহলে আমাদের অবস্থা কী হবে? আমাদের কী পরিণতি হবে, এটা কিন্তু আমরা কেউ ভেবে দেখছি না। এগুলো সবাইকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য আমি এই কথাগুলো বলছি।