বিজেপি কোনও দিনই ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন’ চালু করতে পারবে না'

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বনমন্ত্রী ও তৃণমূলের সিনিয়র নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বিজেপিকে নিশানা করে বলেছেন, বিজেপি কোনও দিনই ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন’ বা ‘সিএএ’ চালু করতে পারবে না।

তিনি আজ (বুধবার) উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বনগাঁয় দলীয় এক কর্মসূচি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালেওই মন্তব্য করেন। সম্প্রতি ঠাকুরনগরে মতুয়াদের এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় জাহাজ এবং  অভ্যন্তরীণ জলপথমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ‘সিএএ’ বাস্তবায়ন হওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

বিজেপি নেতাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে ‘সিএএ’ কার্যকর হওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ওপার বাংলা থেকে আসা হিন্দু ‘উদ্বাস্তু’ বিশেষ করে ‘মতুয়া’ সম্প্রদায়ের মানুষজনকে। সংসদে ওই বিষয়ে আইন তৈরি হলেও তার বিধি তৈরি না হওয়ায় সেটি এ পর্যন্ত কার্যকর হয়নি। নাগরিকত্ব প্রদানকে ইস্যুকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও মামলা রয়েছে। 

‘সিএএ’ ইস্যুতে আজ রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘সিএএ’ হবে কী করে? ধরে নিন আমি লোকসভার সদস্য হয়েছি, আপনি আমাকে ভোট দিয়েছেন। ভোট দিয়ে জেতালেন। আমি আইন প্রণয়ন করলাম। তার পর আপনি বলছেন আপনার নাগরিকত্ব নিতে হবে! তাহলে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা আপনার ছিল না। আপনি আমাকে কী করে জেতালেন? এটা বুঝতে হবে যে ভোটার কার্ড থাকার ফলে আপনি ভোট দিয়েছেন। তার মানে আপনি নাগরিক। সেজন্য ভোটাধিকার পেয়েছেন। আমার নাগরিকত্ব আছে বলেই আমি ভোটার কার্ড পেয়েছি। বিজেপি কোনোদিনই ‘সিএএ’ কার্যকর করতে পারবে না।’ 

তিনি বলেন, ‘আমি নাগরিক। তাহলে আমাকে নতুন করে নাগরিকত্ব নিতে হবে কেন? আমার পরিচয়পত্র আছে, ভোটার কার্ড আছে, প্যান কার্ড আছে, পাসপোর্ট আছে। তাহলে আমাকে নতুন করে নাগরিকত্ব নিতে হবে কেন’ বলেও মন্তব্য করেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

২০১৯ সালের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা ‘সিএএ’ আইনে ‘মুসলিমদের বাদ’  দিয়ে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বিতর্কিত ওই আইনের বিধি তৈরি না হওয়ায় তা এ পর্যন্ত কার্যকর হয়নি।

প্রসঙ্গত, ‘সিএএ’–এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে ২৩২টি আবেদন জমা পড়েছে। আবেদনকারীদের দাবি- তারা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিরোধী নন। কিন্তু ওই আইনে (সিএএ) ধর্মের ভিত্তিতে যে বৈষম্য করা হয়েছে, তারা সেই বৈষম্যের বিরোধী।  
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২৩/একে
 

news