যতক্ষণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন সংখ্যালঘুরা এখানে মাথা উঁচু করে গর্বের সঙ্গে থাকবেন'

সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাথার উপরে ছাতা হয়ে আছেন। যতক্ষণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন, ততক্ষণ সংখ্যালঘু কিংবা উদ্বাস্তু তারা নিশ্চিন্তে এখানে মাথা উঁচু করে গর্বের সঙ্গে সমস্ত অধিকার নিয়ে থাকতে পারবেন। এটাই তৃণমূল কংগ্রেসের অঙ্গীকার।’

আজ (মঙ্গলবার) তিনি বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সংখ্যালঘু্ সেলের উদ্যোগে গোবরডাঙ্গা টাউন হলে এক সভায় বক্তব্য রাখার সময়ে ওই মন্তব্য করেন। তিনি এদিন বিরোধী কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপির সমালোচনা করার  পাশাপাশি ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি প্রতিষ্ঠিত ‘ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট’ বা ‘আইএসএফ’কে ‘কালসাপ’ বলে কটাক্ষ করেছেন। তারা বিজেপির দেওয়া দুধ-কলায় পুষ্ট বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

আজ বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা ‘সিএএ’ ইস্যুতে তার যোগাযোগ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘বিজেপির অনেকেই বিপদ বুঝে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে, জায়গা রাখার কথা ভাবছে। কারণ, যদি ‘সিএএ’ না হয় তাহলে শান্তনু ঠাকুরের সমূহ বিপদ। মুখ দেখাতে পারবেন না মতুয়া সমাজে। তখন কী করবেন? তখন ওই ‘সিএএ’ কেন হয়নি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতায় তিনি সব থেকে বেশি মুখর হবেন। এবং তখন আশ্রয় নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এবং জোড়াফুলের প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়ে মতুয়াদের অধিকারের কথা তখন বলবেন। সেটার জন্যই তিনি পরিকল্পনা করছেন বলেই যোগাযোগ।’  

তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা ‘এনআরসি’র নামে অসমে মানুষজনকে কীভাবে উদ্বাস্তু শিবিরে রাখা হয়েছে এবং সেখানকার যে দুর্বিষহ পরিবেশ সেসব কথা উল্লেখ করেন। জয়প্রকাশ বাবু বলেন, এ রাজ্যে উদ্বাস্তু হোক, মতুয়া হোক, সংখ্যালঘু হোক সবাই যারা এখানে ছিল, আছে এবং থাকবে। তার দাবি- বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘সিএএ’ চালু হলে একদিকে মতুয়াদের বা ওপার থেকে আসা উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেবো। আর মুসলমানদের লাথি মেরে তাড়িয়ে দেবো বর্ডারের ওপাশে। কতবড় স্পর্ধা ভেবে দেখুন। সাত পুরুষ ধরে যারা এখানে আছে, বলছে তাদের থাকতে দেবো না! হয় তাদের ধর্ম পরিবর্তন করতে হবে, না হলে লাথি মেরে তাড়িয়ে দেবো! কে  অধিকার দিল তাকে? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন একজনের গায়ে হাত দিয়ে দেখো। একজনকে নোটিশ ধরিয়ে দেখো। একজনকে বলো এই বাংলায় থাকতে পারবে না। আমি আছি মাথার উপরে ছাতা হয়ে। সবাই যেমন ছিল তেমন থাকবে। কাউকে এ রাজ্য থেকে আমরা তাড়াতে দেবো না।’ 

তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বিজেপি এমপি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘শান্তনু ঠাকুর গত পরশুদিনও বলেছেন ‘সিএএ’ হবেই। কিন্তু দশদিন আগে আমাকে ফোন করে বলেছে জয়প্রকাশ দা কী করব বলুন তো? ও অন্য পার্টির, আমি অন্য পার্টির। কিন্তু ‘বন্ধুত্ব’ একটা আছে। ‘ছোটো ভাই’, সে  ফোন করতেই পারে। বলল কী করব বলুন তো ‘সিএএ’ চালু করতে গেলে যে বিধি তৈরি করতে হবে তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত কমিটির মিটিং হয়নি ১৮ মাস ধরে!’

এ ভাবে তিনি বিজেপি নেতার সঙ্গে তার যোগাযোগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। পরে তিনি তার সাফাইতে বলেন, ‘বিজেপির অনেকেই বিপদ বুঝে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে, জায়গা রাখার কথা ভাবছে। কারণ, যদি ‘সিএএ’ না হয় তাহলে শান্তনু ঠাকুরের সমূহ বিপদ। মুখ দেখাতে পারবেন না মতুয়া সমাজে’ বলেও মন্তব্য করেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার।
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২৩/একে
 

news