কাশ্মীরে স্কুলে ঢুকে শিক্ষিকাকে গুলি করে হত্যা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের নিন্দা
জম্মু-কাশ্মীরের কুলগামের গোপালপোরা এলাকায় রজনী বালা নামে একজন হাইস্কুলের শিক্ষিকাকে গুলি করে হত্যা করেছে অজ্ঞাত গেরিলারা। ৩৬ বছর বয়সী রজনী বালা একাধিক গুলিবিদ্ধ হন। পুলিশ সংশ্লিষ্ট এলাকা ঘিরে ফেলে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।
আজ (মঙ্গলবার) দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগামে গুলিবিদ্ধ ওই শিক্ষিকাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ে তিনি পথে মারা যান। এরআগে গত ১২ মে রাহুল ভাট নামে একজন হিন্দু কাশ্মীরি পন্ডিতকেও তার অফিসে ঢুকে গেরিলারা গুলি করে হত্যা করেছিল। তিনি রাজস্ব বিভাগের কর্মী ছিলেন।
কাশ্মীর পুলিশ বলেছে, সন্ত্রাসীরা কুলগামের গোপালপুরা এলাকায় এক মহিলা শিক্ষকের উপর গুলি চালায়। রজনী বালা নামে ওই শিক্ষিকা সাম্বার বাসিন্দা ছিলেন এবং তার স্বামীর নাম রাজ কুমার। এ সময়ে তিনি কুলামের চাওয়ালগামে ছিলেন এবং গোপালপুরায় তার ডিউটি চলছিল। পুলিশ জানিয়েছে, এই জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত সব সন্ত্রাসীকে শিগগিরি চিহ্নিত করে নির্মূল করা হবে।
জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি সভানেত্রী মেহেবুবা মুফতি কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘কাশ্মীরে ভারত সরকারের স্বাভাবিক অবস্থার দাবি মিথ্যা প্রমাণিত হচ্ছে। তিনি বলেন, এটা পরিষ্কার যে বেসামরিক হত্যার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে এবং এটা উদ্বেগের বিষয়। তিনি আরও বলেন, এই কাপুরুষতাপূর্ণ কাজের নিন্দা না করে বিজেপি মুসলিম বিরোধী খেলায় মেতেছে।
ওই ঘটনায় শোক প্রকাশ করে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের ভাইস চেয়ারম্যান ওমর আবদুল্লাহ বলেছেন, এটা খুবই দুঃখজনক। নিরস্ত্র নাগরিকদের টার্গেট কিলিং এর তালিকায় যুক্ত হল আরেকটি হামলা। যতক্ষণ সরকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশ্বাস না দিচ্ছে, ততক্ষণ নিন্দা ও সমবেদনার মতো শব্দ অসার। একইভাবে পিপলস কনফারেন্স নেতা সাজ্জাদ লোন ও অন্য নেতৃবৃন্দ ওই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেছেন।
গত অক্টোবরে কাশ্মীরে টার্গেট কিলিং শুরু হয়। পাঁচ দিনে সাত বেসামরিক লোককে হত্যা করা হয়, যার মধ্যে একজন কাশ্মীরি হিন্দু পন্ডিত, একজন শিখ এবং একজন অভিবাসী হিন্দু, যিনি কাজের সন্ধানে এসেছিলেন। গত ১৪ এপ্রিল গেরিলাদের গুলিতে সতীশ কুমার নিহত হন। এরআগে এক পুলিশ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করেছিল গেরিলারা।
রাহুল ভাট নিহত হওয়ার পর গণমাধ্যমে কাশ্মীরি হিন্দু পণ্ডিতদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল করার পর, গেরিলা হামলায় ৪ কাশ্মীরি হিন্দু পণ্ডিত সহ ১৪ জন হিন্দু নিহত হয়েছে বলে এরআগে সংসদে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
জম্মু-কাশ্মীরে অবশ্য হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলিম মুসলিম বেসামরিক ব্যক্তি ও পুলিশ হত্যার ঘটনাও ঘটছে। সম্প্রতি হিন্দি গণমাধ্যম ‘সামনা’য় সম্প্রতি প্রকাশ, গত দু’মাসে কাশ্মীর উপত্যকায় ১২ জন মুসলিম পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।।খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে


