বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করতে অন্তবর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক, বহুবচনবাদী গণতন্ত্র রূপান্তর নিশ্চিত করতে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
শনিবার (১৭ আগস্ট) তৃতীয় ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিটে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা, গণমাধ্যম, অর্থনীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার করা অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম কাজ।
তিনটি শূন্যের একটি বিশ্ব গঠনে গ্লোবাল সাউথের নেতাদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, টেকসই ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্তিধর ‘গ্লোবাল সাউথ’ খুবই সময়োপযোগী ও উপযুক্ত। এ অঞ্চলের টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে বিশ্বব্যাপী দক্ষিণকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তিনটি শূন্য—শূন্য কার্বন নিঃসরণ, শূন্য সম্পদ ঘনত্ব এবং শূন্য বেকারত্বের বিশ্ব গড়ার একটি দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে আমরা শুরু করতে পারি।
তিনি বলেন, আপনারা সবাই জানেন যে, বাংলাদেশ গত ৫ আগস্ট একটি ‘দ্বিতীয় বিপ্লব’ প্রত্যক্ষ করেছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের বীর ছাত্ররা একটি গণঅভ্যুত্থান করেছে।
তিনি বলেন, গ্লোবাল সাউথ সৃজনশীল তরুণ জনসংখ্যায় সমৃদ্ধ। সামাজিক ব্যবসার সঙ্গে উদ্যোক্তাকে একত্রিত করে অলৌকিক কিছু করা যেতে পারে। আমরা সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে আমাদের তরুণ জনসংখ্যার সৃজনশীলতা এবং শক্তি উন্মোচন করার জন্য দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে বিশ্বব্যাপী দক্ষিণে কিছু সাধারণ সুবিধার প্রস্তাব করতে চাই।
শনিবার (১৭ আগস্ট) ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন ড. ইউনূস।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ড. ইউনূসকে ফোন করে আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা গ্রহণ করেন। ফোনালাপে দুই নেতার মধ্যে সংখ্যালঘু ইস্যুসহ পারস্পরিক সম্পর্কের নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অধ্যাপক ইউনূসকে শনিবার নয়াদিল্লিতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিতব্য তৃতীয় ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিটে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি সম্মেলনে যোগ দিতে সম্মত হন।
ফোনালাপে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানান মোদি। অন্তর্বর্তী সরকারকে শুভকামনা জানিয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে কাজ করার কথা ব্যক্ত করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ইচ্ছাও ব্যক্ত করেন মোদি। এ ছাড়াও নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়সহ সব সংখ্যালঘুর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের ওপর জোর দিয়েছেন।
ফোনে ড. ইউনূস নরেন্দ্র মোদিকে জানান, অন্তর্বর্তী সরকার হিন্দু সম্প্রদায়সহ সব সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। কথোপকথনে ড. ইউনূস ও মোদি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন।