আচার্য বিল:‌ ‘‌রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীকে একসারিতে নিয়ে এসেছে এই প্রশাসন’‌, বললেন ধনকড়

 রাজ্যপালকে সরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য (Chancellor‌) পদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আনতে চেয়ে বিল পাশ হয়ে গেল বিধানসভায়। এবার ওই বিল পাঠানো হবে রাজ্যপালের কাছে। তিনি সম্মতি দিলেই মুখ্যমন্ত্রী আচার্য পদে বসবেন। তবে এদিনই রাজভবনে এই বিল নিয়ে প্রথম মুখ খুলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।

এদিন রাজভবনে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ওই বিল নিয়ে বলেন, ‘‌বিশ্ববিদ্যলয়ের আচার্য(Chancellor‌) সংক্রান্ত বিলটি আমি আইনের দৃষ্টিতে দেখছি। যা করার আইনিভাবে করব। রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীকে একই জায়গায় নিয়ে এসেছে এই প্রশাসন। বিধানসভায় বিল এনে আমায় আচার্য পদ থেকে সরানো হচ্ছে। আমি বিলটি খতিয়ে দেখব। কোনও পক্ষপাতিত্ব করব না। দেখব সংবিধানকে উপেক্ষা করে এই বিল আনা হয়েছে কী না। যদি সংবিধান উপেক্ষা করা হয়, তাহলে সম্মতি দেব না। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপাল, আইনের উর্ধ্বে কেউ নন।’‌

সেইসঙ্গে একাধিক ইস্যুতে তিনি বলেন, ‘‌বাংলার গণতন্ত্র শেষ নিঃশ্বাস নিচ্ছে। নিয়োগ নিয়ে এত বড় দূর্নীতি দেশ আগে দেখেনি। মাফিয়া আর সিন্ডিকেট রাজ চলছে। তালিকায় না থাকা সত্ত্বেও চাকরি দেওয়া হয়েছে। বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা নষ্টের চেষ্টা চলছে। দূর্নীতির জন্য হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী বঞ্চিত। আমি কখনও আমার শপথবাক্য ভুলিনি।’‌

মঙ্গলবার বিধানসভায় চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য পেশ করেন ‘‌দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অব্ হেলথ সায়েন্সেস্ (অ্যামেন্ডমেন্ট)বিল ২০২২’‌। বিল নিয়ে আলোচনায় বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা বিরোধীতা করেন। অগ্নিমিত্রা পাল,মকুটমণি অধিকারী ,শঙ্কর ঘোষ,অম্বিকা রায়ও এই বিলের বিরোধীতা করেন। এরপর বিরোধী দলনেতা–সহ অনেকে রাজ্যপালের কাছে যান।

বিরোধীদের সমালোচনার জবাব দিয়ে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বিধানসভায় বলেন, ‘‌রাজ্যে ২২৯টি কলেজ। তারমধ্যে ১৪৬ সরকার পোষিত। গত আর্থিক বছরে রাজ্য সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৫৫.৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
এই আমলে প্রতিবছর ডাক্তার বেশি তৈরি হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেডিক্যাল কলেজ বাড়িয়েছেন বলেই তা সম্ভব হচ্ছে।’‌

এখন উচ্চশিক্ষা দফতরের অধীনস্থ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাজ্যপাল। এবার আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভা। কলকাতা, যাদবপুর, প্রেসিডেন্সির মতো ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে বদলের বিল আনা হয়েছে বিধানসভায়। উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ২৭ এপ্রিল কেন্দ্রের তৈরি করা প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মদনমোহন পুঞ্চির নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের কমিশন সুপারিশ করেছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে রাজ্যপালের বদলে রাজ্য নিজেদের পছন্দমতো একজনকে বসাতে পারেন। সেই সুপারিশকে মানদণ্ড হিসেবে ধরেই আনা হয়েছে এই বিল। তবে ওই বিলে রাজ্যপাল স্বাক্ষর করবেন, না কেন্দ্রের কাছে পাঠাবেন, এদিন তা খোলসা করেননি তিনি।খবর দ্য ওয়ালের /এনবিএস/২০২২/একে

news