অসমে বন্যা কবলিত মানুষজনের মধ্যে খাবার পানির সংকট, সরকারি ত্রাণ সাহায্য পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ
  
ভারতের অসমে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনের মধ্যে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ, শিলচর শহরের বহু এলাকায় এখনও ত্রাণ পৌঁছেনি। খাবার পানি পাওয়া যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ না থাকার ফলে মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। এমতাবস্থায় যোগাযোগ করতে পারছেন না বহু এলাকার পানিবন্দি মানুষ। 

এ সম্পর্কে আজ (শনিবার) অসমের হাইলাকান্দি জেলার বিশিষ্ট সমাজকর্মী আব্দুল মান্নান লস্কর রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘বর্তমানে অসমের শিলচর শহর জলমগ্ন হয়ে আছে। বাকি ছোট ছোট বা বড় শহর প্রায় পানিমুক্ত হয়েছে। অন্যান্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেক পানি রয়েছে, কিন্তু শিলচর শহরের পানি কমছে না। হেলিকপ্টার থেকে নির্দিষ্ট জায়গায় খাদ্য সামগ্রী ফেলা হচ্ছে। সেগুলো মানুষের মধ্যে যথাসাধ্য বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সরকারি লোকজন সব জায়গায় পৌঁছতে পারেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘চাল-ডাল ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম অনেক বেড়েছে। খাবার পানির সংকট রয়েছে। সব মিলিয়ে যথেষ্ট অভিযোগ রয়েছে এবং এর সত্যতাও রয়েছে। সরকার চেষ্টা করছে, কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তা পর্যাপ্ত নয়।’    

প্রশাসনের পক্ষ থেকে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ), স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এসডিআরএফ) বা সেনার মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানোর দাবি করা হলেও সমন্বয়ের অভাবে পানিবন্দি বহু এলাকাতে খাবার পানির বোতল পৌঁছয়নি। জানা গেছে, হেলিকপ্টার থেকে খাবার, পানির পাউচ ফেলা হলেও তা কোনও একটি উঁচু বাড়ির ছাদে ফেলা হচ্ছে। কিন্তু গলা পর্যন্ত পানি ভেঙে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই জায়গায় পৌঁছতে অনেকেই সাহস পাচ্ছেন না। ফলে বাধ্য হয়ে পানি কিনে খেতে হচ্ছে। এক একটা পানির বোতল কিনতে হচ্ছে ২০০ টাকা দিয়ে। 

করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, বদরপুর, লক্ষীপুর, উধারবন্দ, শালগঙ্গা এলাকা থেকে এসে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও মানুষজন শিলচর শহরে বানভাসি মানুষের কাছে খাবার পানি, নূন্যতম খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছেন। কেউ খাবার পানি দিয়ে সাহায্য করছেন, কেউ নিয়ে আসছেন শুকনো খাবার। কোথাও আবার রান্না করা খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। কেউ কেউ চিকিৎসার জন্য রোগীদের পৌঁছে দিচ্ছেন হাসপাতালে। কিন্তু এটা করতে গিয়ে সবচেয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে নৌকো নিয়ে। দৈনিক ভাড়া লাগছে পনেরো/কুড়ি হাজার টাকা করে। 

আকাশে ঘনঘন বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার বিভিন্ন বহুতল বা শুকনো এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী ফেললেও এতে খুব একটা ফল হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে অভিযোগ করছেন, হেলিকপ্টারের প্রচণ্ড হাওয়ায় বাড়িঘরের জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ছে। কোনও কোনও বহুতলের উপরে অস্থায়ী তাঁবু বানিয়ে মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন, কিন্তু হেলিকপ্টারের তীব্র হাওয়ায় এসব উড়ে গেছে।খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news