ফের সুন্দরবনে দক্ষিণরায়ের হানা, চলল বাঘ-মানুষে তীব্র লড়াই! প্রাণ রক্ষা হল না মৎস্যজীবীর
সুন্দরবনে (Sunderban) ফের বাঘের আক্রমণে (Tiger Attack) মৃত্যু মৎস্যজীবীর (Fisherman)। আজ, বুধবার সকালে সুন্দরবন জঙ্গলের মরিচঝাঁপির ৩ নম্বর ঝিলা জঙ্গলের নদীখাঁড়ি এলাকার এই ঘটনায় মৃতের নাম বিষ্ণুপদ মিস্ত্রী। ৫৮ বছর বয়সি বিষ্ণুপদ গোসাবা ব্লকের সাতজেলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। প্রতিদিনই সুন্দরবন জঙ্গলের নদীখাঁড়িতে মাছ-কাঁকড়া ধরে জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি।
জানা গেছে, অন্যান্য দিনের মতো আজও ভোরে প্রতিবেশী মৎস্যজীবী তেজেন মণ্ডল ও ভাই বিনয় মিস্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ডিঙি নৌকায় চেপে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে রওনা দিয়েছিলেেন বিষ্ণুপদ। এদিন সকালে নদীখাঁড়িতে নেমে কাঁকড়া ধরতে গেলে, গভীর জঙ্গল থেকে একটি বাঘ বেরিয়ে আসে। প্রথমে ঘাপটি মেরে নদীর পাড়ে বসে শিকারকে টার্গেট করতে থাকে সে। বিষ্ণুপদরা মন দিয়ে কাজ করছিলেন, দেখতে পাননি, বিপদ অপেক্ষা করছে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই আচমকা মৎস্যজীবী বিষ্ণুপদর ঘাড়ের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘ! এর পরে তাঁকে টানতে টানতে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে সে। এই পরিস্থিতিতে সঙ্গীসাথীরা লাঠি আর নৌকার বৈঠা নিয়ে বাঘের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সঙ্গীকে ঊদ্ধারের জন্য। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে বাঘে-মানুষে তুমুল লড়াই। শেষে শিকার ফেলে রেখে অপর দুই মৎস্যজীবীকে আক্রমণ করে গর্জন করতে থাকে বাঘ।
দীর্ঘক্ষণ লড়াইয়ের পরে বেগতিক বুঝে বাঘ তার শিকার ফেলে রেখে রণে ভঙ্গ দেয়। ঢুকে যায় গভীর জঙ্গলে। আহত বিষ্ণুপদকে গুরুতর জখম অবস্থায় আহত নৌকায় তোলেন দুই সঙ্গী। দ্রুত গ্রামের দিকে নৌকা বাইতে থাকেন তাঁরা। তবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মাঝনদীতে নৌকার মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বিষ্ণুপদ।
দাদাকে বাঘের মুখ থেকে ফিরিয়ে আনতে পারলেও শেষরক্ষা না হওয়া শোকে স্তব্ধ হয়েগিয়েছেন মৃত মৎস্যজীবী বিষ্ণুপদর ভাই বিনয় মিস্ত্রী। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন প্রতিবেশী-সহ মৃতের পরিবার-পরিজনরা। যে বা যাঁরা কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন, তাঁদের বৈধ কোনও কাগজপত্র ছিল কিনা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে।খবর দ্য ওয়ালের/এনবিএস/২০২২/একে