কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ বিরোধী প্রার্থী যশবন্ত সিনহার
ভারতে আজ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন ‘এনডিএ’ জোটের প্রার্থী দ্রৌপদি মুর্মু এবং বিরোধীদের প্রার্থী যশবন্ত সিনহার মধ্যে রাষ্ট্রপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা, নিম্নকক্ষ লোকসভা এবং বিভিন্ন রাজ্যের বিধায়করা অংশগ্রহণ করেছেন। ভোট গণনা হবে ২১ জুলাই এবং ২৫ জুলাই দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি শপথ নেবেন।
আজ বিরোধী প্রার্থী যশবন্ত সিনহা বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিধায়ক এবং এমপিদের সার্বিক গোপনীয়তার সুরক্ষা দেওয়া হয়। গোপন ব্যালটে ভোট হয়। যাতে কেউ নিজেদের আসল মতামত প্রকাশ করতে দ্বিধা না করেন। কিন্তু তারপরও টাকার খেলা চলছে। সরকারি এজেন্সিকে ব্যবহার করে দল ভাঙানোর কাজ চলছে।
যশবন্ত সিনহা বলেন, তিনি শুধু রাজনীতির লড়াই লড়ছেন না। তার লড়াই অনেকটাই সরকারি সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধেও। যা কী না সাম্প্রতিককালে অত্যন্ত ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছে। যশবন্তের কথায়, ‘এই কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোই দল ভাঙছে। মানুষকে বাধ্য করছে শাসকদলের পক্ষে ভোট দিতে।’
যশবন্ত সিনহা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় বলেন, ‘এবারের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন দুই ব্যক্তির মধ্যে নয়, দু’টি মতাদর্শের মধ্যে। শুধুমাত্র একটি পক্ষই আমাদের সংবিধানে নিহিত বিধান ও মূল্যবোধ রক্ষা করতে চায়। আমি সব এমপি ও বিধায়কদের কাছে এবার সংবিধান ও তাদের বিবেকের ওপর ভোট দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।’
এনডিএ প্রার্থী দ্রৌপদি মুর্মুর কাছে ছোট-বড় মোট ২৭টি দলের সমর্থন রয়েছে। দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন করার পেছনে বিভিন্ন দলের যুক্তি হচ্ছে, দ্রৌপদী মুর্মু একজন উপজাতীয় নারী এবং তারা প্রথমবারের মতো একজন আদিবাসী নারীকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দেখতে চায়।
অন্যদিকে, বিরোধী প্রার্থী যশবন্ত সিনহার সমর্থনেও অনেক দল সম্পূর্ণ ঐক্যবদ্ধ। এর মধ্যে রয়েছে কংগ্রেস, এনসিপি, আম আদমি পার্টি, টিএমসি, এসপি, সিপিআই(এম), আরএলডি, আরজেডি, আরএসপি, টিআরএস, ডিএমকে, ন্যাশনাল কনফারেন্স, সিপিআই, কেরালা কংগ্রেস (এম)-এর মতো বিরোধীদল।
যদি এইভাবে পরিসংখ্যান দেখা যায়, তাহলে এটা স্পষ্ট যে দ্রৌপদী মুর্মু ঐতিহাসিক বিজয়ের পথে এগিয়ে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে কত শতাংশ ভোট পেয়ে দ্রৌপদী মুর্মু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে যশবন্ত সিনহাকে পরাজিত করেন সেটিই দেখার।
এদিকে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয় প্রায় নিশ্চিত হলেও, নবাগত এমপিদের নিয়ে চিন্তা বিজেপির। পদ্ধতিগত ভুল-ত্রুটির কারণে তাদের ভোট বাতিল হয়ে গেলে, রাজনৈতিক পরিসরে মুখ পুড়তে পারে গেরুয়া শিবিরের। সেজন্য রোববার দলীয় এমপিদের নিয়ে রীতিমতো ‘মক পোল’ আয়োজন করা হয়। সেখানে সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সতর্ক করে বলেছেন, ‘ভোট দিতে গিয়ে ভুলভ্রান্তি যেন না হয়।’ সেই ‘ভুলভ্রান্তি’ থেকে বাঁচাতে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি বিধায়কদের এমএলএ হস্টেলে রাত কাটানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বঙ্গ নেতৃত্ব। মূলত, এমএলএ হস্টেলে যেসব বিজেপি বিধায়ক থাকেন, রোববার দুপুরে তাদেরকে রাজারহাটে একটি অভিজাত হোটেলে নিয়ে আসা হয়। সেখানে কমপক্ষে ৩২টি ঘর ভাড়া নেওয়া হয়।
এ ভাবে বিজেপি বিধায়কদের কার্যত হোটেলবন্দি করে রাখা প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, তৃণমূলের সিনিয়র নেতা অধ্যাপক সৌগত রায় ও অন্যরা বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন।খবর পার্সটুডে/এনবিএস২০২২/একে