মূখ্যমন্ত্রী মমতাকে 'চোরদের রাণী' বললেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী এমপি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে টার্গেট করে তাকে ‘চোরদের রাণী’ বলে কটাক্ষ করেছেন। তিনি আজ (শুক্রবার) গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই মন্তব্য করেন।
পশ্চিমবঙ্গে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা ‘এসএসসি’ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট-এর (ইডি) হাতে সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের সাবেক মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থ বাবুর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বিভিন্ন ফ্ল্যাট থেকে কয়েক কোটি টাকা, গহনা ও অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার হওয়ায় তিনিও গ্রেফতার হয়েছেন ‘ইডি’র হাতে।
তদন্তকারীদের দাবি, অর্পিতার বয়ান অনুযায়ী পার্থ-ঘনিষ্ঠেরা নিয়মিত টাকা নিয়ে ডায়মন্ড সিটি এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে যেত এবং সেখানে টাকা প্যাকেটবন্দি করা হত। প্যাকেট হয়ে যাওয়ার পরে কখনও কখনও তা বাইরেও নিয়ে যাওয়া হতো। টাকার বিষয়ে খোঁজখবর নিতে স্বয়ং পার্থ বাবু মাঝেমধ্যেই সন্ধ্যার পরে যেতেন ওই সব ফ্ল্যাটে।
এ সব ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী এমপি আজ বলেন, ‘তৃণমূলের ভোটার, তারা সৎ, তৃণমূলের সমর্থক, তারা সৎ। তাদের সততাকে, তাদের আন্তরিকতাকে, তৃণমূলের রথী-মহারথীরা অপব্যবহার করে ধনকুবেরে রূপান্তরিত হয়েছেন। ‘ইয়ে তো স্রেফ ঝাঁকি হ্যায়, আভি বহত কুছ বাকি হ্যায়’। এটা তো কেবল নমুনা, এখনও অনেক কিছু বাকি। বাংলার মানুষ নতুন চেহারা দেখছে তৃণমূলের। এই তৃণমূল দেখে বাংলার মানুষ ভোট দেয়নি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতার নাম না করে অধীর বাবু বলেন, ‘দিদি নিজেকে সারদামণি, রানি রাসমণি দেখানোর চেষ্টা করেন, আসলে তিনি হয়েছেন ‘চোরেদের রাণী।’
নিয়োগ-দুর্নীতির মামলায় সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়ার পাঁচদিন পর, দল ও সরকারের সব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) তাকে তিনটি দফতর থেকে সরানোর কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইদিনে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, ‘তদন্ত যতদিন না শেষ হবে, ততদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় দল থেকে সাসপেন্ড থাকবেন। উনি আইনের চোখে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করতে পারলে তখন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এদিকে, আজ শুক্রবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার! আজ তাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য জোকার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তিনি গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।’‘
ইডি’র হেফাজতে থাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এমন মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে নানা জল্পনা। অন্যদিকে, বিরোধীরা দুর্নীতি ইস্যুতে রাজ্য সরকারকে চেপে ধরার চেষ্টা করছে। রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছেন কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপি নেতারা।খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে


