তেলেঙ্গানায় মসজিদ ভাঙার ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড়, ১৪৪ ধারা জারি
ভারতের তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদ সংলগ্ন শামশাবাদে মসজিদ-ই-খাজা মাহমুদ ভেঙে ফেলার ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।
শামশাবাদের গ্রীন এভিনিউ কলোনিতে অবস্থিত মসজিদ-ই-খাজা মাহমুদ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে শামশাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা ভারী পুলিশি ব্যবস্থার মধ্যে ভেঙে দেয়। বলা হচ্ছে যে, প্রায় তিন বছর আগে মসজিদটি তৈরি করা হয়েছিল। স্থানীয় লোকজন জানায়, মসজিদটিতে দুই বছর ধরে নিয়মিত জুমার নামাজসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা হচ্ছিল। অন্য সম্প্রদায়ের স্থানীয় বাসিন্দারা শামশাবাদ শহর কর্তৃপক্ষের কাছে মসজিদ সম্পর্কে অভিযোগ করেছিলেন। এ ছাড়া আদালতে অবৈধভাবে মসজিদ নির্মাণের মামলা রয়েছে।
মুসলিম সম্প্রদায়ের অভিযোগ, শামশাবাদ নগর কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে কড়া পুলিশি ব্যবস্থার মধ্যে মসজিদটি ভেঙে দিয়েছে। মজলিশ বাঁচাও তেহরিক বা এমবিটি’র মুখপাত্র আমজাদ উল্লাহ খান এই বিষয়ে তেলেঙ্গানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী এবং তেলেঙ্গানা রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের সমালোচনা করেছেন এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগ করেছেন।
আমজাদ উল্লাহ খান বলেন, কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের নেতৃত্বে তেলেঙ্গানা সরকার উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বুলডোজার রাজ-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করছে। তার অভিযোগ- ২০১৪ সালে ‘টিআরএস’ দল ক্ষমতায় আসার পর তেলেঙ্গানায় ছয়টি মসজিদ ভাঙা হয়েছে। তিনি মুসলিম সংগঠন এবং রাজনীতিবিদদের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, যারা মুখ্যমন্ত্রী কেসিআরকে ধর্মনিরপেক্ষ নেতা বলে দাবি করেন।
এদিকে, মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন (মিম) বিধায়ক কাউসার মহিউদ্দিন এবং দলের সমর্থকরা গতকাল (বুধবার) রাতে ওই মসজিদের জায়গায় এশার নামাজ পড়েন এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে, পুলিশ সংশ্লিষ্ট এলাকায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে ১৪৪ ধারা জারি করে এবং তাদের হেফাজতে নেয়। মসজিদ ভাঙার প্রতিবাদে ‘মিম’ সমর্থকরা স্থানীয় কালেক্টর এবং কমিশনারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ড’-এর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ রহমানি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, এই বিষয়ে যতই আফসোস করা হোক না কেন তা কম, যে তেলেঙ্গানা সরকার হায়দরাবাদ শহর সংলগ্ন শামশাবাদে ‘মসজিদ-ই-খাজা মাহমুদ’কে রাতারাতি শহীদ করেছে। এটা মুসলমানদের জন্য খুবই দুঃখজনক ও অসহনীয় ঘটনা। একদিকে, সরকার সংখ্যালঘুদের প্রতি সহানুভূতির দাবি করে, অন্যদিকে তেলেঙ্গানায় মুসলমানদের পবিত্র স্থানগুলোর জন্য উত্তর প্রদেশের ‘বুলডোজার সংস্কৃতি’ প্রয়োগ করে। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ড -এর তীব্র নিন্দা করছে এবং কোনো বিলম্ব না করে এখানে মসজিদটি পুনর্নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছে। খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে


