দিলীপ ঘোষের কথায় সিবিআইয়ের সম্মানহানি হচ্ছে : কুণাল ঘোষ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ এমপিকে টার্গেট করে বলেছেন, দিলীপ ঘোষের কথায় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআইয়ের সম্মানহানি হচ্ছে। তিনি আজ (রোববার) গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই মন্তব্য করেন।
বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ আজ পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআইকে কেন্দ্র করে ‘সেটিং’ ইত্যাদি মন্তব্য করেছেন। ওই ইস্যুতে রাজনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
দিলীপ ঘোষ এমপি আজ বলেন, ‘গত কয়েকমাস ধরে রাজ্যে ‘সিবিআই’ তদন্ত চলছিল। কিন্তু তার কোনও প্রভাব পড়ছিল না, কোনও ডকুমেন্ট আসছিল না, কেউ ধরা পড়ছিল না। কারণ, সেখানেও ‘সর্ষের মধ্যে ভূত’ ছিল। আমিও শুনেছি, খবর আছে, জানার পরে কিছু অফিসারকে পরিবর্তনও করা হয়েছে। কিন্তু যথারীতি যা হয় আর কি, সবার একটা পেট আছে, সবাই বিক্রি হয়। তার দাম থাকে। কেউ লাখে, কেউ কোটিতে, কেউ সওয়া কোটিতে, সেভাবে বিক্রি হচ্ছিল। সরকার তা বুঝতে পেরেছে। আমি যতদূর শুনেছি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বিশেষ প্রয়াসে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি এসেছে এবং তার পরে কাজ (তদন্ত) হয়েছে। যারা ‘সেটিং’ করছিলেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন এতদিন তো কোর্টের আদেশে ‘সিবিআই’ তদন্ত হচ্ছিল, ‘ইডি’ কোত্থেকে ছুটে এল? এমন কি ‘ইডি’কে সরাবার জন্য কোর্টেও গেছে। ওই কুকুরটাকে পোষ মানানো যাচ্ছে না। আছে হয়ত কোনও কুকুর আছে, কামড়ে দেবে। কিন্তু যেটা হয়েছে তা হল অসুখ অনুযায়ী ওষুধের পরিমাণ কম হয়ে যাচ্ছে।’
বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ আজ বলেন, ‘বিকৃত ভাবনা এবং বিকৃত ভাষা। কোনও সুস্থ রাজনীতির লোকের, যিনি আবার নাকি কেন্দ্রীয় শাসকদলের এমপি, তার মুখে এই ভাষা শোভা পায় না। কাকে বলছেন, ‘সেটিং’, কীসের সেটিং? আপনারা তো কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতায় আছেন, আপনার দলের নেতা নরেন্দ্র মোদি, আপনার নেতা অমিত শাহ। সিবিআই তাদের অধীনস্থ। সেটিং কাকে বলছেন? সিবিআই বা ইডি এরা কেন্দ্রীয় সরকারের এজেন্সি। কে কার সঙ্গে সেটিং করছে সেটা উনার বলা উচিত। উনি কী ওই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন? উনি কী অমিত শাহকে (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী) গিয়ে বলেছেন। সিবিআই দেশে অপরাধ তদন্ত এজেন্সি। এটা একটা ব্র্যান্ড। বহু দক্ষ অফিসার আছে তাদের মধ্যে। কিন্তু বিজেপি রাজনৈতিকভাবে তাদের কাজকর্মে, অপব্যবহারে এই ব্র্যান্ডটাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে অপপ্রয়োগে সিবিআইয়ের সম্মানহানি হচ্ছে। দিলীপ ঘোষ এসব কথা কাকে বলছেন মানসিক হতাশা থেকে?’
অন্যদিকে, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, দিল্লির বিজেপি বাংলার তৃনমূলকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে।
পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের গোপন আঁতাত রয়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। বিভিন্ন দুর্নীতির তদন্ত ধামাচাপা পড়ে যায় বলে তাদের দাবি। কথিত গোপন আঁতাতকে তারা তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে ‘সেটিং’ বলে কটাক্ষ করে থাকে। এরফলেই রাজ্যে বিভিন্ন দুর্নীতি মামলায় ‘সিবিআই’ অথবা ‘ইডি’ তদন্তের গতি শ্লথ হয়ে পড়ে অথবা তা একসময়ে থেমে যায় বলেও তাদের অভিযোগ। তৃণমূল অবশ্য বিজেপির সঙ্গে কোনোপ্রকার গোপন বোঝাপড়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।খবর পার্সটুডে /এনবিএস/ ২০২২/একে


