চার প্রেমিক বিধবা তরুণীর! আরও এক জন আসতেই শুরু ঝামেলা! খুন হয়ে গেলেন পঞ্চম বৃদ্ধ
ধাঁধার থেকেও জটিল এই প্রেমের কাহিনি, তার চেয়েও নৃশংস তার পরিণতি। চার-চার জনের সঙ্গে প্রেম করতেন বছর তিরিশের বিধবা এক মহিলা (Woman And Her Four Paramours)। এর পরে পঞ্চম প্রেমিকের প্রবেশ ঘটতেই শুরু হয়েছিল জটিলতা। এত জনকে সময় দেওয়া সম্ভব নাকি! তার মধ্যে লেগেই থাকত ঝামেলা। তাই চার প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে পঞ্চম জনকে খুনই (Murder Fifth Lover) করে ফেললেন ওই মহিলা।
গতমাসেই বিহারের নালন্দায় আস্থাবান থানার অন্তর্গত বেলওয়াপার গ্রামে নির্মীয়মাণ বাড়ির জলের ট্যাঙ্ক থেকে এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধারের তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে গোটা ঘটনা। শুনে যেন সকলের চক্ষু চড়কগাছ। প্রেম-পরকীয়ার জেরে খুনোখুনি নতুন নয়। কিন্তু এভাবে একের পর এক প্রেম এবং আগের প্রেমিকদের নিয়ে নতুন প্রেমিককে খুন– এমন কাণ্ডে হতবাক সকলে।
মহিলা-সহ চার প্রেমিক– অভিযুক্ত সকলকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মিঠু কুমার নামের এক ব্যক্তির নিখোঁজ ডায়েরি পেয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। মিঠুর বাবা ত্রিপিট শর্মাকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে ফারে, আস্থাবান পলিটেকনিক কলেজের কাছেই থাকেন পিনু দেবী নামের এক তরুণী বিধবা। একটি চায়ের দোকান আছে তাঁর। কয়েক বছর আগে তাঁর স্বামী রাম পাসোয়ানের মৃত্যু হয়েছে। এর পরেই ওই মহিলার সঙ্গে একাধিক পুরুষের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ত্রিপিট শর্মাও তাঁদেরই একজন।
এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, পিনু দেবীকে ডেকে জেরা করতে শুরু করে পুলিশ। তাতেই সামনে আসে তাঁর চার প্রেমিকের কথা। তাঁদের মধ্যে তিন জন বেশ বয়স্ক এবং একজন যুবক ছিলেন। পঞ্চম জন, আরও এক বৃদ্ধ, অর্থাৎ ত্রিপিট শর্মা নতুনতম প্রেমিক ছিলেন ওই মহিলার। তবে সম্পর্ক গড়ে ওঠার পর থেকেই নানা বিষয়ে মনোমালিন্য শুরু হয় পিনু দেবী ও ত্রিপিটের।;
এক সময়ে পরিস্থিতি এমনই মাত্রা ছাড়ায়, বাকি চার প্রেমিকের সাহায্য নিয়ে ত্রিপিটকে খুন করার ষড়যন্ত্র করেন ওই বিধবা মহিলা, পিনু দেবী। সেই মতোই ১৯ অক্টোবর তিনি প্রেমিক ত্রিপিটকে ওই নির্মীয়মাণ বহুতলের ছাদে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই হাজির ছিল বাকি চার প্রেমিক, ৭৫ বছরের কৃষ্ণনন্দন প্রসাদ, ৬৫ বছরের লোহা সিং, ৫৫ বছরের বাসুদেব পাসোয়ান এবং ৩০ বছরের সূর্যমণি কুমার।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা সবাই মিলে প্রথমে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে দেয় ত্রিপিটের। এর পরে থেঁতলে থেঁতলে বিকৃত করা হয় মুখ, যাতে চেহারা চেনা না যায়। শেষে মৃতদেহটি জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেয় তারা। তার পর থেকেই পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করে ত্রিপিট শর্মার। অবশেষে ২১ অক্টোবর জলের ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁর মৃতদেহ।
তদন্তকারীরা এর পরে হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকেন, কে বা কারা মারল তাঁকে। পিনু দেবীর সঙ্গে সম্পর্ক, বাড়িতে আসা-যাওয়ার কথা জানতে পারলেও, সুনির্দিষ্ট কোনও প্রমাণ ছাড়া বিধবা তরুণীকে চট করে গ্রেফতার করা মুশকিল হচ্ছিল তাঁদের পক্ষে। কিন্তু পিনুর একটি ভুলই ধরিয়ে দেয় তাঁকে।
পুলিশ জানিয়েছে, ত্রিপিটকে খুনের পরে তাঁর মোবাইলটি নিজের কাছে রেখেছিলেন পিনু। এদিকে ত্রিপিটের ছেলে মিঠুর অভিযোগ পাওয়ার পর থেকে ত্রিপিটের ফোন ট্র্যাক করা হচ্ছিল। খুনের মাস খানেক পরে একদিন আচমকা সেই মোবাইলটি অন করে ফেলেন পিনু। তাতেই পুলিশ নিশ্চিত হয়ে যায়, এই খুনে পিনু জড়িত।
পিনুকে আটক করে জেরা করলেই সে একসময় ভেঙে পড়ে। তাঁর কাছ থেকেই গোটা ঘটনা জানতে পারে পুলিশ, খোঁজ পায় চার প্রেমিকেরও। সকলকেই গ্রেফতার করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
খবর দ্য ওয়ালের/এনবিএস/২০২২/একে


