গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন ২৩০ জন মুসলিম প্রার্থী, জয়ী মাত্র ১ জন
ভারতের গুজরাটে ১৮২ আসন সমন্বিত বিধানসভা নির্বাচনে ৭৩টি আসনে ২৩০ জন মুসলিম প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এর মধ্যে মাত্র একজন মুসলিম প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।
১৯৮০ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে মুসলিম বিধায়কের সংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে। ১৯৮০ সালের নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ক্ষত্রিয়, হরিজন, উপজাতি এবং মুসলমানদের কাজে লাগিয়ে সামাজিক প্রকৌশল সূত্র গ্রহণ করেছিল, যা বাস্তবায়নের পর দলের ১২ জন মুসলিম বিধায়ক গুজরাট বিধানসভায় পৌঁছেছিলেন।
২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনজন মুসলিম বিধায়ক কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছিলেন এবং গুজরাট বিধানসভায় পৌঁছেছিলেন। এই বিধায়কদের মধ্যে ছিলেন, মুহাম্মদ জাভেদ পীরজাদা, গিয়াসউদ্দিন শেখ এবং ইমরান খেদাওয়ালা।
২০২২ সালের নির্বাচনে বিজেপি কোনও মুসলিমকে প্রার্থী করেনি। কংগ্রেস দল ৬ জন মুসলিমকে প্রার্থী করেছিল, কিন্তু জামালপুর-খাদিয়া থেকে শুধুমাত্র ইমরান খেদাওয়ালা নির্বাচনে জয়ী হতে পেরেছেন। ইমরান খেদাওয়ালা বিজেপি প্রার্থী ভূষণ অশোক ভাট এবং ‘মিম’ প্রার্থী সাবির ভাই কাবলিওয়ালার সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ইমরান খেদাওয়ালা ৪৫.৮৮ শতাংশ অর্থাৎ ৫৮ হাজার ৪৮৭ ভোট পেয়েছেন। যেখানে, বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৮২৯ ভোট। অন্যদিকে, ‘মিম’ প্রার্থী পেয়েছেন ১৫ হাজার ৬৭৭ ভোট।
কংগ্রেসের টিকিটে দরিয়াপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী ছিলেন গিয়াসউদ্দিন শেখ। দারিয়াপুরে ৪৬ শতাংশ মুসলিম ভোট রয়েছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও গিয়াসউদ্দিন শেখ বিজেপির কৌশিক জৈনের কাছে পরাজিত হয়েছেন। কৌশিক জৈন ৪৯.০৫ শতাংশ ভোট শেয়ারের সাথে ৬১ হাজার ৪৯০ ভোট পেয়েছেন। যেখানে গিয়াসউদ্দিন শেখ ৪৪.৬৭ শতাংশ ভোট শেয়ারের সাথে ৫৬ হাজার ৫ ভোট পেয়েছেন।
কংগ্রেসের অন্য মুসলিম বিধায়ক যিনি এবার হেরেছেন তিনি হলেন মোরবি জেলার ওয়াঙ্কানের বিধানসভা থেকে মুহাম্মদ জাভেদ পীরজাদা। দুই প্রজন্ম ধরে ওই আসনে পীরজাদা পরিবারের আধিপত্য ছিল। এবারের নির্বাচনে বিজেপির জিতেন্দ্র সোমানি জাভেদ পীরজাদাকে পরাজিত করেছেন। জিতেন্দ্র সোমানি ৩৯.৭৫ শতাংশ ভোট শেয়ারের সাথে ৮০ হাজার ৬৭৭ ভোট পেয়েছেন, যেখানে জাভেদ পীরজাদা ২৯.৯২ শতাংশ ভোট শেয়ারের সাথে ৬০ হাজার ৭২২ ভোট পেয়েছেন। এখানে ‘আম আদমি পার্টি’র বিক্রম সোরানি ২৬.৩৫ শতাংশ ভোট শেয়ারের সাথে ৫৩ হাজার ৪৮৫ ভোট পেয়েছেন।
এ ছাড়া আম আদমি পার্টি তিনজন মুসলিম প্রার্থী দিলেও তিনজনই পরাজিত হয়েছেন। ‘বিএসপি’সর্বাধিক সংখ্যক মুসলিম প্রার্থীকে প্রার্থী করেছিল, কিন্তু কেউ সফল হতে পারেননি।
গুজরাটে মুসলমানদের জনসংখ্যা প্রায় ১০ শতাংশ। অধিকন্তু ২৫ টি বিধানসভা কেন্দ্রে উল্লেখযোগ্য মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে। জনসংখ্যা অনুযায়ী গুজরাট বিধানসভায় কমপক্ষে ১৮ জন মুসলিম বিধায়ক থাকা উচিত। কিন্তু গুজরাট বিধানসভার সর্বাধিক সংখ্যক মুসলিম বিধায়ক ছিলেন ১৯৮০ সালে, সে সময়ে ১২ জন মুসলিম প্রার্থী নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। ২০১৭ সালের গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে তিনজন মুসলিম প্রার্থী এবং ২০১২ সালে মুসলিম বিধায়কের সংখ্যা ছিল মাত্র ২ জন।
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে


