পাহাড়ে ‘গণতন্ত্র বাঁচাতে’ হামরোর মঞ্চে গুরুং-তামাং, চ্যালেঞ্জ তৃণমূলকে
দার্জিলিং পুরসভায় ( Darjeeling Municipality ) অনাস্থা ভোটাভুটির আগে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিতে কড়া শীতেও আঁচ বাড়ছে পাহাড়ে। পাহাড়ের গণতন্ত্র বাঁচাতে অজয় এডওয়ার্ডের ( Ajay Edward ) আন্দোলনে সামিল হয়েছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ( Gorkha janamukti Morcha ) সুপ্রিমো বিমল গুরুং ( Bimal Gurung ) ও তৃণমূলের বিনয় তামাং ( Binya Tamang )। তৃণমূল ছাড়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন বিনয়। পাহাড়ের গণতন্ত্র বিপন্ন বলে একযোগে আওয়াজ তুললেন তাঁরা।
বুধবার দার্জিলিং পুরসভায় অনাস্থা ভোটাভুটি। ওইসময় ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। এই আবহেই মঙ্গলবার দার্জিলিংয়ের ক্যাপিটাল হলে ‘গোর্খা স্বভিমান সংঘর্ষ’ মঞ্চ তৈরি করে অজয় তা ভাগাভাগি করে নিলেন বিমল ও বিনয়ের সঙ্গে। সেখানেই চলছে গণস্বাক্ষর অভিযান।
এ দিন ফের একই মঞ্চে বিমল, বিনয় ও অজয়কে দেখে নতুন সমীকরণের আভাসই এখন পাহাড়ের অন্যতম আলোচ্য। বিনয় তামাংয়ের তৃণমূল ছাড়ার ইঙ্গিত নিয়েও শোরগোল। বিনয় তামাং এদিন বলেন, “অনাস্থা ভোটে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সঞ্জয় গুরুংকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। কারণ ওটা আমার সভাসদের অন্তর্গত। যদি তা না হয় তাহলে যে আমি দল ছাড়তে পারি তা কলকাতায় হাইকমান্ডকে জানিয়ে দিয়েছি। আর পাহাড়ের গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থেই আমি এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছি।”
দার্জিলিং পুরসভায় অনাস্থা ভোটাভুটির আগে বিমল গুরুং ও বিনয় তামাংকে ডেকে অজয় এডওয়ার্ড এটা প্রমাণ করতে মরিয়া যে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা অনৈতিকভাবে বোর্ড দখল করতে চাইছে। তাঁর কথায়, “তারা সভাসদ, কাউন্সিলর কিনে পাহাড়ের গণতন্ত্র হত্যা করেছে।” হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ডও এদিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “১৪৪ধারা জারি হলেও আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছে, চলবে। যদি কেউ বাধা দিতে আসে তাহলে আমাকে গ্রেফতার করতে হবে। আমরা অশান্তির বিরুদ্ধে বলেই গান করে, ছড়া লিখে আন্দোলন করছি।”
মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিমল গুরুং বলেন, “পাহাড়ে এখন কোনও অনুশাসন নেই। চোখের সামনে গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছে। টাকার প্রলোভন দেখিয়ে কাউন্সিলর কেনাবেচা চলছে। আমরা এই রাজনীতির বিরুদ্ধেই সকলে এক হয়েছি। শুধু তাই নয় আগামীতে পৃথক রাজ্য নিয়ে আন্দোলনের রূপরেখাও তৈরি করব আমরা সকলে মিলে।”
তবে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে নতুন বোর্ড গড়ার। বুধবার তারাই বোর্ড দখল করবে বলে এক প্রকার নিশ্চিত তারা। এ প্রসঙ্গে দলের মুখপাত্র কেশবরাজ পোখরেল বলেন, “ওরা হারার ভয়ে শঙ্কিত। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এসব ভুলভাল আন্দোলন করছে। শুধু তাই নয় শান্তিপূর্ণ পাহাড়কে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। আমাদের দেশে নেতারা দল পরিবর্তন করেই থাকে। এটায় কোনও দোষ দেখতে পাচ্ছি না। আর ওদের এই আন্দোলনকে গোটা পাহাড় গুরুত্ব দিচ্ছে না।”দার্জিলিং পুরসভার অনাস্থা ভোটাভুটি প্রেক্ষাপট হলেও, এই মঞ্চেই আগামীর পাহাড় রাজনীতির নতুন সমীকরণ দেখছেন স্থানীয় মানুষ।
খবর দ্য ওয়ালের /এনবিএস/২০২২/একে


